Image

মুরাদনগরে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিরুদ্ধে সেবাপ্রত্যাশি ও গ্রাহকদের নানা অভিযোগ

মনির খাঁন, কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি: কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১, মুরাদনগর সাব জোনাল অফিস এখন সেবা প্রত্যাশি বা গ্রাহকদের জন্য চরম বিড়ম্বনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেবার নামে অনিয়ম, গ্রাহকদের সঙ্গে অসৌজন্য আচরণ, অতিরিক্ত বা ভৌতিক বিল করা সহ দালাল চক্রের দৌরাত্মে পল্লী বিদ্যুতের এ অফিসটি নানা পদে পদে গ্রাহক হয়রানীর কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
জানা যায়, মুরাদনগর উপজেলার নবীপুর পশ্চিম ইউনিয়নের হোসাইনতলা গ্রামের আদম আলীর মেয়ে রাবেয়া আক্তার সেলিনা এ বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি একটি নতুন মিটারের জন্য আবেদন করেন। আবেদন করার ৭ মাস পর সরেজমিনে গিয়ে বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন জানান তাকে নতুন সংযোগ দেওয়া সম্ভব না। কারন হিসেবে উল্লেখ করেন সংযোগস্থল থেকে বৈদ্যুতিক খুঁটির দূরত্ব বেশি। অথচ ওই আবেদিত মিটারের প্রতিবেদন দাখিল করতে ৭মাস সময় লেগেছে মুরাদনগর সাব জোনাল অফিস কর্মকর্তাদের।
 
মুরাদনগর সদরের আনোয়ারা বেগম নামে এক গ্রাহক বলেন, প্রতিমাসে তার মিটারে ২শ’ টাকার মতো বিল আসে। কিন্তু অক্টোবর মাসে ২ হাজার ৬২৫টাকা বিল আসে। এ নিয়ে আমি মুরাদনগর সাব জোনাল অফিসে অভিযোগ জানালে তারা লিখিত আবেদন করতে বলে। লিখিত আবেদন করলেও সমস্যার পুরোপুরি সমাধান হয়নি। এধরণের ভৌতিক বিল নিয়ে অফিসে গিয়ে বার বার হয়রানী হচ্ছি। কোন সমাধান মিলছে না।
 
নবীপুর গ্রামের প্রীতি সাহা নামে এক গ্রাহক বলেন, ঘূর্নিঝড় মিধিলির প্রভাবে একটি পেপে গাছ পরে আমার বৈদ্যুতিক মিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে তা মেরামতের জন্য অফিসে গেলে তারা আমাকে বলে ওয়ারিং রিপোর্টের জন্য ৫শ’ টাকা দিতে হবে এবং নতুন মিটারের জন্য ১ হাজার ২৪০টাকা এবং মিটারের সংযোগ দেওয়ার জন্য যারা যাবে তাদের যাতায়াত খরচের টাকা দিতে হবে।
 
নবীপুর গ্রামের আনিসুর রহমান নামে এক গ্রাহক বলেন, আমার বোন একটি নতুন মিটারের আবেদন করলে এ মিটার সর্ম্পকে খোঁজখবর নিতে অফিসে গেলে এ অফিসের এজিএম ফরিদ উদ্দিন আমাকে দালাল বলে অফিস থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। অফিসের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তার কাছ থেকে এধরণের অসৌজন্যমূলক আচরণ আমরা আশা করি না। কয়েক মাস হয়ে গেলেও আমার বোন মিটার পায়নি। অথচ যারা এ অফিসে দালালের মাধ্যমে মিটারের আবেদন করে তারা সপ্তাহ না যেতেই মিটার পেয়ে যায়। এখানে দালালের মাধ্যমে সহজে কাজ করানো যায়। আর দালাল ছাড়া গেলে মাসের পর মাস ঘুরতে হয়।
 
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ মুরাদনগর সাব জোনাল অফিসের এসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম) ফরিদ উদ্দিন মুঠোফোনে জানান, কোনো কারনে মিটার ক্ষতিগ্রস্ত হলে গ্রাহককে ওয়ারিং রিপোর্ট নতুন করে নিশ্চিত করতে হবে। এতে করে একজন গ্রাহক দূর্ঘটনা থেকে ঝুকি মুক্ত থাকবে। নতুন মিটারের আবেদন করার ৭মাস পর খুঁটি থেকে সংযোগস্থলের দূরত্ব বেশী এমন প্রতিবেদন দেওয়ার কারন কি এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমরা সর্ব্বোচ ১মাসের মধ্যেই নতুন মিটারের আবেদনের সংযোগ দিয়ে থাকি। নতুন মিটার আবেনকারির ভাইকে দালাল বলার কারণ কী এমন প্রশ্নের জবাবে এজিএম ফরিদ উদ্দিন বলেন, আমার সামনে অনেক লোক বসা আছে, আপনি অফিসে আসেন, বিস্তারিত কথা বলবো’।