Image

প্রত্যাশার আলো জ্বেলে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে দৈনিক পত্রদূতের ৩০তম জন্মদিন পালন

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: ‘আগামী দিনের আশা ভরসার কত না মধুর ছবি, ফুটিয়া উঠেছে আঁখির পাতায় ডুবেছে যখন রবি’-এমনই আশা-প্রত্যাশার আলো জ্বেলে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে পালিত হয়েছে দৈনিক পত্রদূতের ৩০তম জন্মদিন। মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) শীতের আলো ঝলমল সোনালী সকালে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে দৈনিক পত্রদূতের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে বসেছিল সর্বস্তরের মানুষের মিলনমেলা। শিক্ষক-ছাত্র, আইনজীবী, রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা, ক্রীড়াবিদ, লেখক, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, কৃষক, শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষের উপস্থিতিতে মুখর হয়ে উঠেছিল সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব চত্ত্বর। হাতে ফুল আর চোখে স্বপ্ন নিয়ে এসেছিলেন তরুণ-তরুণী, যুব-বৃদ্ধ সবাই।
অনুষ্ঠানে বক্তারা সাতক্ষীরার সামগ্রিক উন্নয়নে ও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে দৈনিক পত্রদূতের প্রতিষ্ঠাতা বীরমুক্তিযোদ্ধা শহীদ স ম আলাউদ্দীনের চিন্তা, স্বপ্ন ও পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে বলেন, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী স ম আলাউদ্দীন ছিলেন সাতক্ষীরার ভোমরা বন্দর আধুনিকায়নের রূপকার, সাতক্ষীরা চেম্বার অব কমার্সের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, সাতক্ষীরা ট্রাক মালিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা, বঙ্গবন্ধু পেশাভিত্তিক স্কুল এন্ড কলেজের (পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু পেশাভিত্তিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়) প্রতিষ্ঠাতা, সাবেক প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য এবং মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। সাতক্ষীরার রেললাইন, পর্যটন, যাতায়াত ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে তিনি আমৃত্যু কাজ করেছেন। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের সমস্যা, সম্ভাবনা, উন্নয়ন, অগ্রগতি সারা দেশের মানুষের সামনে তুলে ধরার জন্য স ম আলাউদ্দীন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন দৈনিক পত্রদূত। দৈনিক পত্রদূত পত্রিকার দুই বছর পার না হতেই পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব স. ম. আলাউদ্দীনকে রাইফেলের গুলিতে হত্যা করা হয়েছিল। ১৯৯৬ সালের ১৯ জুন পত্রদূত পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছিলেন তাঁরই চেয়ারে বসে। স ম আলাউদ্দীন আজ বেঁচে থাকলে সাতক্ষীরার চেহারা পাল্টে যেতো। তিলোত্তমা নগরীতে পরিণত হতো সাতক্ষীরাসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চল।
বক্তারা আরও বলেন, আজ প্রকাশনার ২৯ বছর পূর্ণ করল দৈনিক পুত্রদূত। নানা চড়াই-উতরাই ও কণ্টকাকীর্ণ পথ অতিক্রম করে দৈনিক পত্রদূত আজ গণমানুষের মুখপাত্রে পরিণত হয়েছে। দৈনিক পত্রদূতের পাতায় পাতায় পাঠকের স্বপ্নে ভরা।  দৈনিক পত্রদূত নির্ভীক, বস্তুনিষ্ঠ, নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সাংবাদিকতার প্রতি অঙ্গীকারে আবদ্ধ দৈনিক পত্রদূত। সংবাদপত্র কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর অভিপ্রায় প্রকাশের বাহন হতে পারে না। দেশপ্রেম, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, অসাম্প্রদায়িকতা, আন্তর্জাতিক চেতনা, নারী অধিকারের পক্ষে দৈনিক পত্রদূত। সব ধরনের দুর্নীতি-অনিয়ম, অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে দৈনিক পত্রদূত সোচ্চার। নিজ নিজ এলাকার খবর, ব্যবসা-বাণিজ্যের খবর, লেখাপড়া, বিনোদন, নারী, শিশু-কিশোর, তারুণ্য, সাহিত্য-শিল্প-সংস্কৃতি, বিজ্ঞান-কম্পিউটার, খেলাধুলাসহ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রত্যাশার আলো দেখায় দৈনিক পত্রদূত।
বক্তারা আরও বলেন, দৈনিক পত্রদূতের কণ্ঠ রোধ করতে সাবেক এমপি রবিসহ কুচক্রী মহল বারবার চেষ্টা করেছে। কিন্তু কোন চক্রান্তই পত্রদূতের পথচলাকে রোধ করতে পারেনি। সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবকে কুক্ষিগত করে সাবেক এমপির মদদে তার লোকজন সাধারণ মানুষের কণ্ঠরোধের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তিনি সফল হননি। বক্তারা বলেন, কোন অপশক্তির বাঁধাই পত্রদূতের অগ্রযাত্রাকে থামাতে পারবে না। কেননা পত্রদূত গণমানুষের পত্রিকা। পত্রদূত মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী।
সাতক্ষীরা উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে আরও সামনের দিকে এিেগয়ে নিতে পত্রদূত বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করবে। মানুষের অধিকার আদায়ের ন্যায়ভিত্তিক আন্দোলনে পত্রদূত সামনে থেকে নেতৃত্ব দিবে এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বক্তারা বলেন, পত্রদূত গ্রামীন মানুষের হাজারো সমস্যার কথা বলুক। শহরের জনজীবনের অভাব অনটনের চিত্র তুলে ধরুক। শ্রমিকের ন্যায্য পাওনার পক্ষে থাকুক। কৃষকের দাবীর স্বপক্ষে থাকুক। সমস্যা চিহ্নিতকরণের পাশাপাশি উন্নয়নের ধারার সাথে মিশে যাক পত্রদূত। সাতক্ষীরা জেলার মানুষের আশা আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে পত্রদূত পত্রিকার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলে সচেষ্ট থাকবেন এ প্রত্যাশা করেন বক্তারা।
আধুনিক সাতক্ষীরার রূপকার, সাবেক প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য, বীরমুক্তিযোদ্ধা স ম আলাউদ্দীন প্রতিষ্ঠিত দৈনিক পত্রদূত ৩০-এ পদার্পন উপলক্ষে নান্দনিক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দৈনিক পত্রদূতের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক লায়লা পারভীন সেঁজুতি।
অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা সদর আসনের নবনির্বাচিত এমপি আশরাফুজ্জামান আশু, সাতক্ষীরা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: নজরুল ইসলাম, জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি শেখ আজহার হোসেন, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক কালের চিত্র সম্পাদক অধ্যক্ষ আবু আহমেদ, সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল হামিদ, দৈনিক দক্ষিণের মশালের সম্পাদক অধ্য আশেক-ই-এলাহী, সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শেখ শাহিদ উদ্দীন, বীরমুক্তিযোদ্ধা বিএম আব্দুর রাজ্জাক, সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক আ হ ম তারেক উদ্দীন, জেলা পুলিশিং কমিটির সভাপতি বিশিষ্ট সমাজ সেবক ডা: আবুল কালাম বাবলা, ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্টের সভাপতি কাজী নওশাদ দেলোয়ার রাজু, দৈনিক পত্রদূতর বার্তা সম্পাদক এসএম শহীদুল ইসলাম, চিফ রিপোর্টার আব্দুস সামাদ, বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী মাধব চন্দ্র দত্ত, জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইদ্রিস আলী, বিশিষ্ট উদ্যোক্তা ইঞ্জিনিয়ার শামস্ ইশতিয়াক শোভন, সাবেক ফিফা রেফারী তৈয়ব হাসান বাবু, দেশ টিভির সাতক্ষীরা প্রতিনিধি শরীফুল্লাহ কায়সার সুমন, মোহনা টিভির সাতক্ষীরা প্রতিনিধি আব্দুল জলিল, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির সাতক্ষীরা প্রতিনিধি আবুল কাশেম, জেলা নাগরিক কমিটির সভাপতি এড: আজাদ হোসেন বেলাল, জেলা জাসদের সভাপতি শেখ ওবায়দুস সুলতান বাবলু, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক মোশফিকুর রহমান মিল্টন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন দৈনিক পত্রদূতের উপদেষ্টা সম্পাদক ও সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ। সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন দৈনিক পত্রদূতের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও সাবেক সিবিএ নেতা শেখ হারুন উর রশিদ।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জজ কোর্টের সাবেক পিপি এড: ওসমান গনি, জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা: সুব্রত ঘোষ, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক আতাউর রহমান, জিয়াউর রহমান বাচ্চু, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আশিকুর রহমান, জেলা ক্রীড়া সংস্থার তাজুল ইসলাম রিপন, যুবলীগ নেতা জাহিদুর রহমান বাপ্পি, জাতীয় পার্টির বাপ্পি, শেখ নাঈম হোসেন, নারী নেত্রী জ্যোৎস্না দত্ত, শিমুন শামস্, নাজমুন নাহার মুন্নি, তানজিলা খাতুন, সীমা সিদ্দিক, গাজী মাহিদা মিজান, সাতক্ষীরা প্রি-ক্যাডেট স্কুলের উপাধ্যক্ষ ছন্দা রাহা, শিক্ষক রেবেকা সুলতানা, বাংলাদেশ বেতারের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি ফারুক মাহবুবুর রহমান, বাংলাদেশ সংস্থার সাতক্ষীরা প্রতিনিধি দিদারুল ইসলাম, দৈনিক সাতক্ষীরার সকালের নির্বাহী সম্পাদক আমিরুজ্জামান বাবু, বণিক বার্তার সাতক্ষীরা প্রতিনিধি গোলাম সরোয়ার, এখন টিভির আহসানুর রাজিব, দৈনিক হৃদয়বার্তার আলী মোক্তাদা হৃদয়, দৈনিক পত্রদূতের সাবেক বার্তা সম্পাদক আমিনুর রশিদ, সাংবাদিক এবিএম মোস্তাফিজুর রহমান, চ্যানেল টোয়েন্টি ফোর’র আমিনা বিলকিস ময়না, দৈনিক বাংলার আবু সাঈদ, সাপ্তাহিক সূর্যের আলোর সম্পাদক আব্দুল ওয়ারেশ খান চৌধুরী, শামীম খান চৌধুরী, দৈনিক সাতনদীর জহুরুল কবির, সাংবাদিক রবিউল ইসলাম, গাজী হাবিব, গাজী ফরহাদ, এম জিললুর রহমান, মনসুর রহমান, দৈনিক পত্রদূতের সহকারী সম্পাদক (সাহিত্য) সৌহার্দ্য সিরাজ, সহকারী সম্পাদক সাখাওয়াত উল্যাহ, সুদয় কুমার মন্ডল, শেখ বেলাল হোসেন, অনলাইন ইনচার্জ আসাদুজ্জামান সরদার, নিজস্ব প্রতিনিধি জিএম আমিনুল হক, শেখ আব্দুল আলিম, নাজমুস শাহাদাত জাকির, ইব্রাহীম খলিল, এসএম বিপ্লব হোসেন, আব্দুর রহিম, শাহজাহান কবির, মৃত্যুঞ্জয় অপূর্ব, জাহিদ হোসেন, সেলিম হোসেন, মাছুম বিল্লাহ, মোজাফফর রহমান, আব্দুল মাজেদ, শামীম রেজা রাজু, রেজাউল ইসলাম বাবলুসহ ইল্ট্রেনিক্স, প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকরা। এছাড়া বিভিন্ন পেশাজীবী ও সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।