Image

১৯ দিনে ১২ হাজার টন বোমা ফেলেছে ইসরাইল

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক: ইসরাইলি আক্রমণের পর থেকে ভয়ংকর হয়ে উঠেছে গাজার পরিস্থিতি। একের পর এক হামলায় গাজা এখন মৃত্যুপুরী। অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং বোমা হামলায় নিহত হচ্ছেন অজস্র মানুষ। আহতদের কেউ কেউ পেয়েছেন পঙ্গুত্ব বা আজীবন বিকলাঙ্গের বোঝা। 

ইসরাইলের বিভীষিকাকে এবার হিরোশিমার ভয়াবহতার সঙ্গে তুলনা করলেন যুক্তরাষ্ট্রের পুলিৎজার পুরস্কারপ্রাপ্ত সাংবাদিক সেমুর হার্শ। 

 

তার মতে, চলমান এ হামলায় গাজায় ১২ হাজার টন বোমা নিক্ষেপ করেছে ইসরাইল যা জাপানের হিরোশিমায় ফেলা বোমার সমান। বুধবার যুগান্তরকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য দিয়েছে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস। 

চলমান ইসরাইল-হামাস যুদ্ধে গাজায় ইসরাইলি নৃশংসতাকে চরম নিন্দা জানিয়েছেন হার্শ। 

তিনি বলেন, ‘ইসরাইল গাজা শহরকে হিরোশিমাতে পরিণত করতে বদ্ধপরিকর, কিন্তু পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার না করেই। স্থল অভিযান চালালে ইসরাইলি বাহিনী বাঙ্কিং বাস্টারসহ আমেরিকান গাইডেড বোমা ব্যবহার করতে পারে। এই বোমাগুলো বিস্ফোরণের আগে ৩০-৫০ মিটার গভীরতায় প্রবেশ করতে পারে, যা হামাসের ভূগর্ভস্থ অস্ত্র উৎপাদন সুবিধাগুলোকে ধ্বংস করে দিতে পারে। 
আগ্রাসন শুরুর পর থেকে গাজা উপত্যকায় প্রতি বর্গ কিলোমিটারে গড়ে ৩৩ টন বিস্ফোরক ছোড়া হয়েছে।’ 

হার্শ আরও বলেন, ইসরাইলের ‘বিশাল স্থল আক্রমণের’ কোনো পরিকল্পনা নেই, কারণ ইসরাইলি সৈন্যদের টার্গেট ‘আন্ডারগ্রাউন্ড হামাস সদস্য’। গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি হামলার গত ১৮ দিনের দৈনিক আপডেট সম্পর্কে সরকারি মিডিয়া অফিস। 

ইসরাইলের ক্রমাগত আক্রমণে প্রতি ১০০ জন নাগরিকের মধ্যে একজন নিহত বা আহত হয়েছেন। মোট বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা প্রায় ১.৪ মিলিয়নে পৌঁছেছে, যা উপত্যকার জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ। অবরুদ্ধ গাজায় ২২২টিরও বেশি আশ্রয়কেন্দ্র ছড়িয়ে রয়েছে যার মধ্যে ১০০টি গাজার উত্তর উপত্যকায়। 

চলমান আগ্রাসনের কারণে ১ লাখ ৮৩ হাজারের বেশি হাউজিং ইউনিট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাছাড়া ২৮ হাজারটিরও বেশি আবাসন ইউনিট সম্পূর্ণভাবে ভেঙে ফেলা হয়েছে বা বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এ হামলায় ৭৫টি সরকারি সদর দপ্তর এবং সেবা সুবিধা ধ্বংস ও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

১৭৭টি বিদ্যালয় বিভিন্ন ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে, ৩২টি বিদ্যালয়ের পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ৩৫টি মসজিদ এবং ৩টি গির্জা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

চলমান হামলায় আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ সাদা ফসফরাস ব্যবহার করা হয়েছে যা আহতদের দেহের পোড়া এবং চামড়া গলে যাওয়া থেকে স্পষ্ট।