Image

ভারতে থেকেও নিয়মিত স্বাক্ষর করছেন হাজিরা খাতায়, তুলছেন বেতন ভাতা!

আমিনুল ইসলাম বজলু, পাইকগাছা (খুলনা): ভারতে অবস্থান করেও একজন এমপিও ভূক্ত সহকারী শিক্ষিকা নিয়মিত করছেন স্কুলের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর। ব্যাংক হতে উত্তোলন করছেন বেতন বিলের টাকা। দীর্ঘ প্রায় এক বছর ধরে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের যোগসাজসে বেতনের টাকা ভাগাভাগির শর্তে চলছে এমন তুঘলোকি কান্ড। ঘটনাটি ঘটছে পাইকগাছা থানার হরিঢালী ইউনিয়ন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।
 অভিযোগে রয়েছে, বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুধাংশু কুমার মন্ডল প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পালন কালীন সময়ে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। এমনকি প্রতিষ্ঠানের বাৎসরিক আয়-ব্যয়ের হিসাব কিংবা আভ্যন্তরিন অডিট করার নির্দেশনা থাকলেও অদ্যবদি অডিট না করারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তবে অত্র প্রতিষ্ঠানের এমপিও ভূক্ত কর্মরত সহকারী শিক্ষিকা (হিন্দু ধর্ম) লিপিকা রাণী ভদ্র বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থেকে কিভাবে দীর্ঘ এক বছর নিয়মিত হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করছেন কিভাবে তার বেতনের কয়েক লক্ষ টাকা উত্তোলন করেছেন এটা শুনে রীতিমত অবাক হয়েছেন সহকর্মী ও প্রতিষ্ঠান কর্মচারীবৃন্দ। হরিঢালী ইউনিয়ন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুধাংশু কুমার মন্ডল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। 
তিনি জানান, লিপিকা রাণী ভদ্রের স্বামী ভারতে বসবাস করেন। তিনি অসুস্থ তাই সভাপতির কাছ থেকে ছুটি নিয়ে লিপিকা ভদ্র ভারতে গিয়েছেন। এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত লিপিকা ভারতে অবস্থান করছেন বলে জানান। তবে ঠিক কত দিনের ছুটি নিয়েছেন, ভারতে অবস্থান করার ক্ষেত্রে সরকারী নিয়ম অনুসরন করে ছুটি নিয়েছেন কিনা কিংবা এই ছুটির অনুমতি প্রদানে কোন রেজুলেসান রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। এদিকে নিয়ম বহিভূত ভাবে লিপিকা ভদ্র অনুপস্থিত থাকা অবস্থায় সরকারী অর্থ উত্তোলনে সহযোগিতা করায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে উৎকোচ গ্রহনের অভিযোগ তিনি অস্বীকার করলেও স্কুল পরিচালনা পরিষদের সভাপতির দিকে উৎকোচ গ্রহনের অভিযোগের আঙ্গুল তোলেন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, লিপিকা ভদ্র আমার দায়িত্ব কালিন সময়ের পূর্বেও এমন কর্ম করেছেন। তৎকালীন প্রধান শিক্ষকের সাথে ঘনিষ্ট সম্পর্কের সুবাদে তিনি স্কুলে কিছু টেবিল ও বেঞ্চ জরিমানা স্বরূপ প্রদান এবং প্রধান শিক্ষককে সন্তোষ্ট করে সে সময় রক্ষা পান। 
এব্যাপারে হরিঢালী ইউনিয়ন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ মুনছুর আলী সরদার পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, আমি একজন বয়স্ক মানুষ। আমাকে ভুল বুঝিয়ে ও ভুল তথ্য দিয়ে বেতন বিলের স্বাক্ষর করিয়ে নিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুধাংশু কুমার মন্ডল নিজে লিপিকার স্বাক্ষর জাল করে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। আমি (সভাপতি) প্রতিষ্ঠানটি সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনার স্বার্থে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উপ-পরিচালক, দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়, খুলনা বরাবর লিখিত আবেদন করেছি। এবিষয়ে পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি আমার জানা নাই। তবে এ ধরনের কাজ করার কোন সুযোগ নাই। আমি শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।