Image

কর্মীদের জীবন বদলে দেয়ার চমকপ্রদ কাজ

আদর্শ বসেরা তাদের কর্মীদের সম্মান করেন এবং সব বিষয়ে স্বচ্ছতা ধরে রাখেন। অনুপ্রেরণা জোগান, নিজেকে দলের অংশ বলে মনে করেন এবং কর্মীদের জীবন আরো সহজ ও উন্নত করতে চেষ্টা করেন। কে বলে টাকায় সুখ কেনা যায় না? ২০১৫ সালে ক্রেডিট কার্ড প্রসেসিং কোম্পানি গ্র্যাভিটি পেমেন্টসের সিইও ড্যান প্রাইস তার নিজের মিলিয়ন ডলারের বেতন কমিয়ে ৭০ হাজার ডলার করেন। নিউইয়র্ক টাইমসের খবর অনুসারে, নিজের বেতন ৯০ শতাংশ কমিয়ে ফেলেন এই সিইও। নিজে বেতন কম নিয়ে বাকি অর্থ তিনি তার কর্মীদের বেতন বাড়াতে ব্যবহার করেন।

কোম্পানির খরচে ছুটি উপভোগ : মার্কেটিং অ্যান্ড অ্যাডভার্টাইজিং কোম্পানি স্টিলহাউজের কর্মীরা বছরে একবার কোম্পানির খরচে যে কোনো সময়, যে কোনো স্থানে ছুটি কাটাতে যেতে পারতেন। এজন্য প্রত্যেক কর্মীকে কোম্পানির পক্ষ থেকে দেয়া হতো ২ হাজার ডলার। কোম্পানির কর্মীরা অফিসের কাজে আরো বেশি মনোযোগী এবং উন্নয়নমুখী হয়ে গেলেন। এতে কোম্পানির আয়ও বেড়ে গেল কয়েক গুণ। এই কৌশলের পেছনে মূল ভূমিকা পালন করেছেন কোম্পানির সিইও মার্ক ডগলাস। আগের কর্মস্থল থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। আর এ কারণেই তিনি তার কর্মীদের ছুটি কাটাতে উৎসাহিত করেছেন। ‘আমি যখন প্রথমবার কর্পোরেট সংস্কৃতিতে যাই, সেখানে আমি এগুলো পেয়েছিলাম। এটি আমার দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিয়েছে।’ বলেন মার্ক ডগলাস।

মারাত্মক ভুল ক্ষমা : খ্যাতনামা স্টেকহাউজ হকসমোর ম্যানচেস্টারে গত ১৫ মে রাতে দুর্ভাগ্যজনক একটি ঘটনা ঘটে। রেস্টুরেন্টটির একজন ওয়েটার ভুলবশত কাস্টমারকে একটি রেড ওয়াইন সার্ভ করেছিলেন, যার মূল্য ৪ হাজার ৫০০ ব্রিটিশ পাউন্ড (প্রায় ৬ হাজার ডলার)। কাস্টমার এবং ওয়েটার কেউই বিষয়টি খেয়াল করেননি। যখন অপর এক কর্মী টেবিল পরিষ্কার করছিল, তখনই এই ভুলটি সামনে আসে। কিন্তু হোটেল কর্তৃপক্ষ এই ব্যয়বহুল ভুলের জন্য ওই ওয়েটারের বিরুদ্ধে কোনোরকম ব্যবস্থা নিলেন না! বরং তারা বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রসিকতা করার সিদ্ধান্ত নিলেন! ঘটনার পর হকসমোর ম্যানচেস্টার কর্তৃপক্ষ তাদের টুইটে বলে, ‘সে কাস্টমার বরাবর, যাকে গতরাতে ভুলক্রমে এক বোতল ‘চাটিউ লে পিন পোমরল ২০০১’ দেয়া হয়েছিল। আশা করি আপনি সময়টি বেশ উপভোগ করেছেন!’ ওই টুইটে আরো বলা হয়, ‘আমাদের যে সদস্য ভুলক্রমে ঘটনাটি ঘটিয়েছে তাকে বলছি, চালিয়ে যাও! একটি ভুল হয়েছে তো কি হয়েছে! যেটাই হোক আমরা তোমাকে ভালোবাসি।’

মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রাধান্য : সাম্প্রতিক এক তারকার আত্মহত্যার ঘটনার পর, টেক জায়ান্ট সিসকোর সিইও চাক রবিনস তার ৭৫ হাজার কর্মীকে ই-মেইল করেন। সেখানে তিনি মানসিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দিয়ে লিখেছিলেন, একে অন্যের সঙ্গে খোলা মনে কথা বলুন ও সহানুভূতি বাড়ান এবং প্রয়োজনে তাদের পেশাদার সাহায্য নিতে উৎসাহিত করুন। রবিনস কল্পনাও করেননি যে এত কর্মী তার আহ্বানে সাড়া দেবেন। একশ’র বেশি কর্মী রবিনসের মেইলের উত্তর দিয়েছিলেন, যেখানে তারা তাদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে লড়াইয়ের কথা লিখেছিলেন। রবিনস সমস্যার ব্যাপকতা অনুধাবন করে কর্মীদের উদ্বেগ এবং হতাশার বিরুদ্ধে লড়াই সহায়তায় মেডিটেশন এবং ইয়োগা ক্লাস ও কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করেন। কর্মীদের পাশাপাশি তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্যও স্বাস্থ্যসেবা সহায়তা কার্যক্রমের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

কিডনি দান : হেইনস অ্যান্ড বোন ফার্মে দীর্ঘদিন কাজ করা একজন কর্মীর যখন ২০১০ সালে জীবন রক্ষাকারী কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হয়েছিল, তখন প্রতিষ্ঠানটির পার্টনার ম্যাথিউ ডেফব্যাচ বস হিসেবে তার ভূমিকা অতিক্রম করে কর্মীর বিপদে এগিয়ে গেলেন। তিনি ওই কর্মীকে নিজের একটি কিডনি দান করেন। বিজনেস ইনসাইডারের খবর অনুসারে, যেই ব্যক্তির কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হয়েছিল তিনি ছয় বছরের একটি শিশুর বাবা। ডেফব্যাচ বলেছিলেন, একটি শিশু তার বাবাকে ছাড়া বড় হবে।

মানবকণ্ঠ/জেএস