Image

মহানায়কের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন

বাংলার আকাশে নেই মেঘের ঘনঘটা। পুব আকাশে উঠেছে ঝলমলে রক্তিম লাল সূর্য। সূর্যের রক্তিম লাল আভায় প্রতিদিন ঘুম ভাঙে আমার। এরপর সারাবেলা আমি খুঁজে ফিরি আমার জাতির পিতাকে। যিনি আমার মননে, চিন্তা, চেতনায় আর অস্তিত্বের সাথে ওতপ্রোতভাবে মিশে রয়েছেন। 

শৈশব থেকেই আমার মনোজগতের পুরোটা জুড়েই ছিল বঙ্গবন্ধুর একচ্ছত্র আধিপত্য। জাতির পিতার পুণ্যভ‚মি গোপালগঞ্জে জন্মগ্রহণ করার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। গোপালগঞ্জের অবারিত প্রাকৃতিক পরিবেশে জাতির পিতার আদর্শকে বুকে ধারণ করেই আমার বেড়ে ওঠা। আমার কাছে মুজিব মানে একটি মহাকাব্য, একটি স্বাধীনতা, একটি সার্বভৌম বাংলাদেশ। মুজিব মানেই কোনো অপশক্তির কাছেই মাথানত না করা। মুজিব মানেই ৭ মার্চের উত্তাল জনসমুদ্র। মুজিব মানেই একাত্তরে গর্জে ওঠা মুক্তিবাহিনীর হাতিয়ার। মুজিব মানেই সুদূর টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া। মুজিব মানেই গোপালগঞ্জ, টুঙ্গিপাড়া।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির অস্তিত্বের স্বপ্নের পুরোধা, প্রবাদ পুরুষ। তিনি খোকাবাবু থেকে কখনো হয়ে উঠেছেন মহাপুরুষ, কারো কাছে তিনি মহামানব, কেউ ডেকেছেন মহাপ্রাণ নামে, কারো কাছে মনে হয়েছে তিনি কিংবদন্তির জীবন্ত নায়ক, কেউ চিনেছেন তাঁকে দানবীর হিসেবে। সর্বশেষ তিনি ‘বঙ্গবন্ধু’ খেতাবে ভ‚ষিত হন। লাল-সবুজের পতাকার ইতিহাসে বাংলাদেশ আর বঙ্গবন্ধু নামটি অবিচ্ছেদ্য। পশ্চিম পাকিস্তানিদের শোষণ ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সাড়ে সাত কোটি বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ করে বঙ্গবন্ধু আমাদের দিয়েছিলেন কাক্সিক্ষত স্বাধীনতা। বাঙালি জাতির হাজার বছরের কাক্সিক্ষত স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে রাতের অজস প্রহর আর দিনের রৌদ্রছায়ার হাজারো ক্ষণ কারাগারে নিঃসঙ্গ সময় পার করতে হয়েছে বঙ্গবন্ধুকে। জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়গুলো, যৌবন ও তারুণ্যের মূল্যবান সময়গুলো তাঁকে কাটাতে হয়েছে কারাবন্দি হিসেবেই। জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলন করতে গিয়েই তাঁর জীবনে বারবার এই দুঃসহ নিঃসঙ্গ কারাজীবন নেমে আসে। কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে বসেই বঙ্গবন্ধু স্বাধীন বাংলার পরিকল্পনা করেছিলেন।

১০ জানুয়ারি ছিল হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। পাকিস্তানে বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে ১৯৭২ সালের এদিন দুপুর ১টা ৪১ মিনিটে জাতির পিতা স্বাধীন বাংলার মাটিতে প্রত্যাবর্তন করেন। আনন্দে আত্মহারা লাখ লাখ বাঙালি ঢাকা বিমানবন্দরে তাঁকে প্রাণঢালা সংবর্ধনা জানান। দেশের মাটিতে পা রেখেই তিনি সবার ত্যাগের কথা স্মরণ করেন, সবাইকে নিয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে আত্মনিয়োগ করেন।
১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশন থেকে প্রচারিত এক ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘শ্মশান বাংলাকে আমরা সোনার বাংলা করে গড়ে তুলতে চাই। যে বাংলায় আগামী দিনের মায়েরা হাসবে, শিশুরা খেলবে। আমরা শোষণমুক্ত সমাজ গড়ে তুলব।

ক্ষেত-খামার কলকারখানায় দেশ গড়ার আন্দোলন গড়ে তুলুন। কাজের মাধ্যমে দেশকে নতুন করে গড়া যায়। আসুন সকলে মিলে সমবেতভাবে আমরা চেষ্টা করি যাতে সোনার বাংলা আবার হাসে, সোনার বাংলাকে আমরা নতুন করে গড়ে তুলতে পারি।’ মূলত স্বাধীনতা লাভের এক বছরের মধ্যেই দেশ পুনর্গঠনে বহুমুখী কর্মসূচি গ্রহণ, গোটা দেশবাসীকে এ কাজে উজ্জীবিতকরণ এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দেশের ভাবমূর্তি উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর নেয়া পদক্ষেপসমূহ আশাতীত সাফল্য অর্জন করে। পরবর্তী সময়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, ব্রিজ, কালভার্ট, সেতু নির্মাণ, অভ্যন্তরীণ রুটে বিমান চলাচল-ব্যবস্থার উন্নয়ন, টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার পুনর্গঠন, দক্ষ পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়ন, পাঁচসালা পরিকল্পনা প্রণয়ন, আদমশুমারি ইত্যাদি কর্মপ্রয়াসে বঙ্গবন্ধু উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন।

‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’- বঙ্গবন্ধু এই পররাষ্ট্রনীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন। বঙ্গবন্ধু দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন প্রতিটি জাতির সার্বভৌমত্বে। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু দেশে ফেরার সময় মুক্তিযুদ্ধে সহায়তাকারী ভারতীয় সৈন্যরা বাংলাদেশে অবস্থান করছিল। বঙ্গবন্ধু ফেব্রুয়ারির শুরুতে ভারত সফরে গেলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে সৈন্য ফিরিয়ে নেয়ার অনুরোধ জানান। বঙ্গবন্ধুর অনুরোধে সাড়া দিয়ে ইন্দিরা গান্ধী ভারতীয় সৈন্যদের ফিরিয়ে নেন। এরপর অল্প সময়ের মধ্যেই অনেক দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ প্রথম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের সময়েই বিশ্বের ৫৪টি দেশ বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে দেয়। ’৭২-এর শেষ দিকে এসে সংখ্যাটি আরো বেড়ে যায়।

এরপর খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বাংলাদেশ কমনওয়েলথ, জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও), বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) প্রভৃতির সদস্য হয়ে ক‚টনৈতিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে। স্বল্প সময়ের মধ্যে বিশ্বের প্রায় সকল রাষ্ট্রের স্বীকৃতি আদায় এবং জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্যপদ লাভ ছিল বঙ্গবন্ধু সরকারের উল্লেখযোগ্য কূটনৈতিক সাফল্য।

বঙ্গবন্ধুই এদেশে কৃষি বিপ্লবের সূচনা করেছিলেন। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের জনগণের ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মুক্তির লক্ষ্যে কৃষি উন্নয়নের বৈপ্লবিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। কৃষিভিত্তিক প্রতিষ্ঠান স্থাপন, পুনঃসংস্কার, উন্নয়ন এবং ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন, উদ্যান উন্নয়ন বোর্ড, তুলা উন্নয়ন বোর্ড, বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি, ইক্ষু গবেষণা প্রতিষ্ঠান, মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনসহ অনেক নতুন প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করেন। এছাড়াও তিনি বেশ কিছু যুগান্তকারী পদক্ষেপও নিয়েছিলেন। তার মধ্যে আধুনিক কৃষি গবেষণার ব্যবস্থা করা, কৃষিতে ভর্তুকি প্রদান, কৃষিঋণের সহজীকরণ ও সমবায় চাষ পদ্ধতির প্রচলন অন্যতম। বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শিতা বাংলাদেশের কৃষিকে এক অসামান্য পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিল।

১৯৭৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি দিনটি ছিল বাংলাদেশের কৃষিবিদদের জন্য একটি স্মরণীয় দিন। এদিন বঙ্গবন্ধু সরকারি চাকরিতে কৃষিবিদদের মর্যাদা দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে প্রথম শ্রেণি করার প্রতিশ্রুতি দেন এবং তা বাস্তবায়ন করেন। বাংলার মানুষের মুক্তির এই মহানায়ক স্বাধীনতা সংগ্রাম শেষে যখন জাতীয় পুনর্গঠন ও অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন নিশ্চিত করেছিলেন, তখনই ঘাতকের নির্মম বুলেট তাঁকে জনগণের কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকের নির্মম বুলেটের আঘাতে সপরিবারে না ফেরার দেশে চলে যান সারা বাংলার মেহনতি মানুষের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সঙ্গে সঙ্গে দেশের কৃষির অগ্রযাত্রাও স্থিমিত হয়ে যায়।

পদ্মা, মেঘনা, যমুনা বিধৌত এ ব-দ্বীপের সৌভাগ্য বঙ্গবন্ধুর মতো স্বাধীনচেতা ও দূরদর্শী নেতার সংস্পর্শ পাওয়া। বঙ্গবন্ধু কেবল দেশের একজন বড় মাপের নেতা ও রাজনীতির একজন মহানায়কই শুধু ছিলেন না, তিনি ছিলেন ‘ইতিহাসের মহানায়ক’। অসাধারণ নেতৃত্বের গুণাবলির স্বতঃস্ফ‚র্ত বিকাশ সে সময় আর কারো মধ্যে দেখা যায়নি। এমনকি বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্র্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ সে নেতৃত্বের অভাব বোধ করেছে গভীরভাবে। ব্রিটিশ শাসন থেকে বের হয়ে আসার জন্য পূর্ব বাংলায় মাস্টারদা সূর্যসেন, নেতাজী সুভাষ বসুসহ অনেকেই চেষ্টা করেছেন। সূচনা করেছেন সশস্ত্র সংগ্রামেরও। কিন্তু তা অসময়োচিত, অপরিকল্পিত হওয়ায় এবং এতে সাধারণ জনগণকে সম্পৃক্ত করতে না পারায় তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়নি। সফল হয়নি সেসব আন্দোলন। বঙ্গবন্ধু পেরেছিলেন। তিনি মাটি ও মানুষের নেতা ছিলেন বলেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপ্নটি সত্য হয়েছিল। রাজনৈতিক-সামাজিক ধারাবাহিক বিবর্তনের মধ্য দিয়েই বঙ্গবন্ধু ইতিহাসের মহানায়কের এই অবস্থানে উত্থিত হতে পেরেছিলেন। দেশ, দেশের মানুষ ও রাজনীতি ব্যাপারে তাঁর ভাবনা-চিন্তা, আদর্শবোধ-জীবনদর্শন ইত্যাদি অনুষঙ্গ আত্ম-পরিচয়ের মৌলিক উপাদানগুলো ক্রমান্বয়ে বিকশিত হয়েছে।

তার সার্বিক বিবর্তনের গতি ছিল সামনের দিকে, প্রগতি অভিমুখে। তিনি ছিলেন সাধারণ মানুষের লোক, ছিলেন জনতার নেতা। মানুষের কাছ থেকে তিনি গ্রহণ করতে পারতেন, বিচার-বিবেচনার রসদ সঞ্চয় করতে পারতেন। তাঁর চিন্তাভাবনার কেন্দ্রে ছিল বাঙালির স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিটি বিষয়। তিনি সর্বদা মানবতার মুক্তি ও কল্যাণ নিয়ে ভাবতেন। এই নিরন্তর সম্পৃক্তির উৎস ভালোবাসা, অক্ষয় ভালোবাসা। যে ভালোবাসা বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি এবং অস্তিত্বকে অর্থবহ করে তুলেছিল। তিনি বাঙালি জাতিকে দিয়েছেন স্বাধীনতা, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ নামক একটি রাষ্ট্র; হয়েছেন জাতির পিতা এবং বিশ্বে বাঙালি জাতিকে বীর হিসেবে দিয়েছেন অনন্য মর্যাদা। তাঁর ব্যক্তিত্বে ছিল চুম্বকের মতো আকর্ষণ যা মানুষকে টেনে আনত এবং ধরে রাখত। নিজের আদর্শ এবং উদ্দীপনাকে তিনি অনায়াসে সংক্রমিত করতে পারতেন অন্যদের মধ্যে, যার ফলে তারাও তাঁর কাজের অংশীদার হয়ে যেতেন। তিনি বিশ্ববরেণ্য একমাত্র বাঙালি নেতা যিনি ‘ভয়েস অব বেঙ্গল’ এবং ‘রাজনীতির কবি’ পরিচয়ে ভূষিত।

বঙ্গবন্ধু ব্যক্তিচরিত্রে ব্যতিক্রম এবং দৃষ্টান্তও ছিলেন। ব্যতিক্রম মাত্রই দৃষ্টান্ত নন। দৃষ্টান্ত হন তাঁরাই যাঁরা দেশের জন্য অনন্য অবদান রেখে যান। বঙ্গবন্ধু ব্যতিক্রম ছিলেন। তিনি সাধারণের সঙ্গে স্বতঃস্ফ‚র্তভাবে, কোনো ফাঁক কিংবা রাখ-ঢাক না রেখেই মিশতেন। তিনি ঔপনিবেশিক শাসনামলে জন্মেছিলেন, তবে পরাজয় মানেননি। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি দেশের মানুষের কল্যাণে যুদ্ধ করে গেছেন। চরিত্রের অতিমানবিক গুণটি তাঁকে প্রসারিত করেছে, দুঃখভারাক্রান্তদের কাছে নিয়ে গেছে। ফলে তাঁর যুদ্ধটা কেবল ব্যক্তিগত অর্জন-উন্নতিতে সীমাবদ্ধ থাকেনি, ব্যক্তিগত উন্নতিকে তিনি সমার্থক করেছিলেন সমষ্টির জন্য সুন্দর ভবিষ্যৎ তৈরিতে। দেশের মানুষের কল্যাণে। দেশের নিজস্ব পরিচয়ের জন্য। এ জন্যই তিনি দৃষ্টান্ত। অতি মানবিক গুণাবলির কারণেই গ্রামের ছেলে শেখ মুজিব আজ ইতিহাসের মহানায়ক বাঙালি জাতির জনক। বঙ্গবন্ধুর চরিত্রের ভেতরে আরেকটি গুণ ছিল। তাহলো সংবেদনশীলতা আর অসাম্প্রদায়িকতা।

তখনো তিনি হাইস্কুলের ছাত্র। শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক তখন বাংলার প্রধানমন্ত্রী আর সোহরাওয়ার্দী শ্রমমন্ত্রী। তাঁরা গোপালগঞ্জে আসবেন। তাঁদের সংবর্ধনার জন্য বিরাট সভার আয়োজন করা হয়। সেই সংবর্ধনা সভার প্রধান স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বঙ্গবন্ধু। তিনি হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে কাজ করেছিলেন। এতে হিন্দুদের আপত্তি ও কোনো কোনো মুসলিম সদস্যের অনীহাকে তিনি পরোয়া করেননি। তাঁর মতে, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার আগে মানুষ সত্য। আর মানুষ হিসেবে আমাদের প্রধান দায়িত্ব সমাজ, দেশ ও জাতির উন্নয়ন। বিশ্বাসের এ ধারাটি তাঁর মধ্যে সমুন্নত ছিল জীবনের শেষদিন পর্যন্ত। এই পৃথিবীতে যতদিন বাংলাদেশের অস্তিত্ব থাকবে, বাঙালি জাতি থাকবে-ততদিনই থাকবে বঙ্গবন্ধুর নাম। বঙ্গবন্ধু তাঁর সীমাহীন আত্মত্যাগ ও দেশপ্রেমের জন্য ইতিহাসের পাতায় যুগ যুগ ধরে অমর অক্ষয় হয়ে থাকবেন। জাতির পিতা কৃষিসমৃদ্ধ সোনার বাংলা’র স্বপ্ন দেখেছিলেন। আমাদের দায়িত্ব হবে-দেশকে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ উন্নত দেশে পরিণত করে জাতির জনকের সে স্বপ্ন পূরণ করা। তা হলেই এ মহান নেতার আত্মা শান্তি পাবে এবং আমরা তাঁর প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে পারব। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।

লেখক- ড. শরীফ এনামুল কবির : সাবেক সদস্য, বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন। সাবেক উপাচার্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।

মানবকণ্ঠ/এইচকে