Image

সৈয়দপুরে দুই ঘন্টার ঝড় ও ভারী বৃষ্টিপাতে ফসল ও বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি: মৌসুমী ঝড় ও ভারী বৃষ্টিপাতে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলায় ফসল ও বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির হয়েছে। রবিবার (১৮মে) বিকেল ৪ টার পর শুরু হওয়া প্রায় দুই ঘন্টার ঝড় ও অবিরাম বৃষ্টিতে  উঠতি বোরো ধান, আম, ভুট্টা, সবজি কাঁচা মরিচসহ অন্যান্য ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৃষ্টির সঙ্গে দমকা ঝড়ে পৌর এলাকাসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে

পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়ি ও দোকানপাট লন্ডভন্ড হয়েছে। ঝড়ের দাপটে অসংখ্য গাছপালা উপড়ে গেছে, ভেঙে পড়েছে অনেক গাছের ডাল। এছাড়া শহর ও গ্রামের বিভিন্ন স্থানে ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের চালা উড়ে গেছে। তবে ঝড় বৃষ্টিতে ভালো খবর হলো হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি। 

সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হাকিম জানান, রবিবার সকাল ৬ টা থেকে সোমবার (১৯ মে) সকাল ৬ টা পর্যন্ত সৈয়দপুরসহ আশেপাশের এলাকায় গড় বৃষ্টিপাত হয়েছে ১২৮ মিলিমিটার। 

এ সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘন্টায় ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার। তিনি জানান, মঙ্গলবার (২০ মে)  পর্যন্তু ঝড়ো বাতাস ও বজ্রসহবৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায় , ঝড় ও ভারী বৃষ্টিপাতে সৈয়দপুর পৌর এলাকাসহ উপজেলার কামারপুকুর, কাশিরাম বেলপুকুর , বাঙ্গালীপুর, বোতলাগাড়ি ও খাতামধুপুর ইউনিয়নে  ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বোরো ধান ও ভুট্টা ক্ষেত পানিতে ডুবে গেছে । মৌসুমী ফল আম জাম,কাঠালের ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়েছে ঝড়ের তীব্রতায়। অনেক এলাকায় সবজি বাগানেরও ক্ষতি হয়েছে। গ্রামাঞ্চলের অনেক জায়গায় কেটে রাখা ধানের জমিতে পানি জমে যাওয়ায় ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

সৈয়দপুর শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঝড়ে দোকানের চালা উড়ে গেছে। গাছ উপড়ে পড়ে ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ঝড় ও ভারী বৃষ্টির কারণে শহর ও গ্রামাঞ্চলে প্রায় ৫ ঘন্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল। ঝড় ও বৃষ্টির দাপট কমে এলে রাত ১০টার পর বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়। 

উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের কৃষক মো. দুলু জানান, দুই বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছি।  আগামী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে ধান কাটা-মাড়াই শুরু হওয়ার কথা ছিল, তার আগেই এমন দুর্যোগ বেশীর ভাগ নষ্ট হওয়ার আশংকা তার। 

শহরের হাতিখানা এলাকার বাসিন্দা বেবী জানান, ঝড়ে আমার আধাপাকা ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। কিভাবে ঘরটি মেরামত করবো তা ভেবে পাচ্ছিনা।

এ বিষয়ে সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভূষণ জানান, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে ইতোমধ্যে মাঠপর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা কাজ শুরু করেছেন। এখন পর্যন্ত হিসাব পাওয়া যায়নি, তবে  প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি বলেই মনে হচ্ছে। 

সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌরসভার প্রশাসক নূর-ই-আলম সিদ্দিকী জানান, ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত সহায়তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।