Image

সৈয়দপুরে দিনেদুপুরে বাসার ভেতরে এক নারীকে হত্যা

মিজানুর রহমান মিলন, সৈয়দপুর : নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরে দিনেদুপুরে একটি বাসার ভেতরে সামসুন নাহার (৬৭) নামের এক নারীকে মাথায় আঘাত করে নির্মমভাবে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।

আজ মঙ্গলবার (১ জুলাই) দুপুরে শহরের চাঁদনগর এলাকায় তুলশীরাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা  রহিলা পারভীনের বাসায় ওই হত্যাকান্ডটি সংঘটিত হয়েছে। এ ঘটনার পর ওই বাসা থেকে নগদ ৪৫ হাজার টাকা, দুই ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও একটি এলইডি টিভি সেট খোয়া গেছে বলে দাবি করা হয়।

ঘটনার বিষয়ে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বাসাটিতে ওই নারীকে একা পেয়ে তাকে হত্যা করে ওই মালামালগুলো নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। 

জানা গেছে, সৈয়দপুর তুলশীরাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা রহিলা পারভীন। তাঁর স্বামী ঠিকাদার মোকছেদুল হক গত ৬/৭ বছর বছর আগে মারা গেছেন। তাঁদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তারা ঢাকায় বসবাস করছেন। আর শিক্ষিকা রহিলা পারভীন একা হওয়ার কারণে শহরের চাঁদনগর এলাকায় নিজ বাসায় তাঁর দুর সম্পর্কের বোন সামসুন নাহারকে নিয়ে বসবাস করেন। সামসুন নাহারের বাড়ি দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার ফতেজংপুর ইউনিয়নের ডাঙ্গারহাট ফকিরপাড়ায়। তাঁর স্বামী মৃত. আজহার আলী। তাঁর এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। 

ঘটনার দিন মঙ্গলবার (১ জুলাই) স্কুল শিক্ষিকা রহিলা পারভীন প্রতিদিনের মতো তার ওই বৃদ্ধা বোনকে বাসায় রেখে কর্মস্থলে যান। 

স্কুল শিক্ষিকা রহিলা পারভীন জানান, ঘটনার দিন

বেলা সোয়া একটার দিকে তিনি বিদ্যালয়ের টিফিন কালীন দুপুরের খাবার খেতে বাসায় আসেন।  বাসায় এসে দরজা বন্ধ পেয়ে বাসায় থাকা বোন সামসুন নাহারকে ডাকাডাকি করেন। কিন্তু তাঁর কোন সাঁড়া শব্দ না পেয়ে পাশের বাসার লোকজনকে ডেকে আনি। পরে দরজা খুলে দেখতে পাই আপা (সামসুন নাহার) রক্তাক্ত অবস্থায় বাসার ঘরের মেঝেতে পড়ে রয়েছেন। এসময় তাঁর চিৎকারে আশেপাশের লোকজন দ্রুত ছুঁটে আসেন।

নিহতের ছেলে সামসুল হক (৪৭) বলেন, সকাল ১১ টার দিকেই মায়ের সাথে মোবাইলে কথা হয়েছে। এসময় তিনি শরীর ভালো নয় বলে জানান। তখন তাকে বাড়িতে চলে আসতে বলি। এতে মা বলে আগামী রবি/ সোমবার বাড়িতে আসবেন। কিন্তু দুপুর ৩ টার দিকে মোবাইলে জানানো হয় মা মারা গেছে। তাড়াতাড়ি এসে দেখি মা কে হত্যা করা হয়েছে।

খবর পেয়ে সৈয়দপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার একেএম ওহিদুন্নবী, থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ফইম উদ্দিনসহ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেন। পরে পুলিশের সিআইডি টিমের সদস্যরা এসে হত্যাকান্ডের বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেন।  

আইনী প্রক্রিয়া শেষে লাশ থানায় নেয়া হয়েছে। 

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বৃদ্ধার মরদেহ থানায় ছিল।

দিনে দুপুরে বৃদ্ধাকে হত্যার ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। লোকজনের ধারণা দুর্বৃত্তরা চুরি করতে এসে তাদেরকে হয়তো চিনে ফেলায় মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। 

থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ফইম উদ্দিন বলেন, 

ঘটনার সাথে যারাই জড়িত থাকুক তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।