Image

পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিয়ে শীর্ষে ভারত

স্পোর্টস ডেস্ক: ইতিহাস আর বদলানো হলো না পাকিস্তানের। পাওয়া হলো না বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে আরাধ্য জয়। জয় তো দূর, লড়াইও করতে পারলো না বাবর আজমের দল। পারেনি চাপে ফেলতেও। অবশ্য দুই শ’র নিচে সংগ্রহ নিয়ে এমন আশা করাটাও বাড়াবাড়ি! বিশ্বকাপে জয়ের দিক থেকে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৮-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ভারত।

কেন তাদের আনপ্রেডিক্টেবল বলা হয়, আহমেদাবাদে শনিবার আরো একবার তা প্রমাণ করে পাকিস্তান। একটা সময় যেখানে মনে হচ্ছিলো অনায়াসেই ৩০০ পেরোবে সংগ্রহ, সেখানে দুই শ’-ও স্পর্শ করা হয়নি। ৪২.৫ ওভারে ১৯১ রানে গুটিয়ে যায় ইনিংস।

পাকিস্তানকে পেলেই যেন ক্ষুধার্ত হয়ে উঠে রোহিত শর্মার ব্যাট। আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আরো একবার জ্বলে উঠেন নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে। ছোট লক্ষ্যকেও ছোট মনে হয়নি, ব্যাট চালান ঝড়ো গতিতে। তার ৬৩ বলে ৮৯ রানের ইনিংসে ১১৭ বল ও ৭ উইকেট হাতে রেখেই জয় তুলে নেয় ভারত।

এদিন রোহিত জ্বলে উঠলেও অপরপ্রান্তে থেকে শুভমান গিল ও বিরাট কোহলি ইনিংস গুছিয়ে আনার আগেই ফিরেছেন। উদ্বোধনী জুটি ভাঙে ২৩ রানে। ১১ বলে ১৬ রানে শাহিন শাহ আফ্রিদির শিকার হন শুভমান। সমান ১৬ রান করে ফেরেন তিনে নামা কোহলিও। ৯.৫ ওভারে হাসান আলির বলে নাওয়াজকে ক্যাচ দেন তিনি।

৭৯ রানে ২ উইকেট হারানোর পর শ্রেয়াস আইয়ারকে নিয়ে রোহিত জয়ের খুব কাছে পৌঁছে দেন দলকে। ৭১ বলে ৭৭ রান যোগ করেন দু'জনে। একটা সময় মনে হচ্ছিলো হয়তো বিশ্বকাপে নিজের অষ্টম সেঞ্চুরিটা পেয়ে যাবেন রোহিত, তবে তা আর হয়নি। ২১.৪ ওভারে শাহিন আফ্রিদির শিকার হলে থামে তার ইনিংস।

বাকি কাজটা সমাধা করেন শ্রেয়াস। ফিফটি তুলে নিয়ে নিশ্চিত করেন দলের জয়। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৬২ বলে ৫৩ রানে। লোকেশ রাহুল চারে নেমে করেন ১৯ রান।

এর আগে আহমেদাবাদে হঠাৎ ঝড়ে যেন লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় পাকিস্তানের ইনিংস। মুহূর্তেই এলোমেলো হয়ে যায় তাদের ব্যাটিং অর্ডার। চোখের পলকেই ভেঙে পরে ইনিংসের মেরুদণ্ড। ২৯.৩ ওভারে ২ উইকেটে ১৫৫ রান থেকে পাকিস্তান পরিণত হয় ৩৫.২ ওভারে ১৭১/৭-এ।

৩৫ বলের ব্যবধানে মাত্র ১৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ধসে যায় পাকিস্তানের ইনিংস। যার শুরুটা হয় বাবর আজমকে দিয়ে। পাকিস্তান অধিনায়ককে ৩০তম ওভারে ফেরান সিরাজ। ৫৮ বলে ৫০ করে আউট হন তিনি। ভাঙে রিজওয়ানের সাথে তার ৮০ রানের জুটি। সেই সাথে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে দলের মিডল অর্ডার।


এক ওভার পরের কুলদীপ যাদবের জোড়া শিকার, আর ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ পায়নি পাকিস্তান। একই ওভারে ফেরেন পাঁচে নামা সৌদ শাকিল ও ছয়ে আসা ইফতেখার আহমেদ। ১০ বলে ৬ করে এলবিডব্লু হন শাকিল, ইফতেখারের স্ট্যাম্প ভাঙা পড়ে ৪ বলে ৪ করে।

৩৩তম ওভারে ফেরেন পাকিস্তানের ভরসা হয়ে থাকা রিজওয়ান। বুমরাহর শিকার হন ৬৯ বলে ৪৯ রানে। এখানেও শেষ হয়নি ধস। এক ওভার পরে এসে সহ অধিনায়ক শাদাব খানকেও ফেরান বুমরাহ। ৭ ওভারে মাত্র ১৯ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন এই পেসার।

দ্রুত পাঁচ উইকেট হারিয়ে লেজ বেরিয়ে আসে পাকিস্তানের ইনিংসের। হাসান আলি ১৯ বলে ১২ করে শিকার হন জাদেযার। আর কেউ পারেননি দুই অংকের ঘরে যেতে। শেষ পর্যন্ত ৪২.৫ ওভারে মাত্র ১৯১ রানে শেষ হয় পাকিস্তানের ইনিংস।

অবশ্য নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে ভালো শুরু পায় পাকিস্তান। ভারতীয় বোলারদের দেখেশুনে খেলে দুই ওপেনার রান বাড়াতে থাকে স্কোরবোর্ডে। অষ্টম ওভারে এসে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। ফেরেন আব্দুল্লাহ শফিক।

আগের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শতক হাঁকানো আব্দুল্লাহ ফেরেন ২৪ বলে ২০ রানে। ৪০ রান যোগ করেন ইমাম উল হকের সাথে। ভালো শুরু করেও ইনিংস বড় করতে পারেননি ইমামও৷ ৩৮ বলে ৩৬ করে লোকেশ রাহুলকে ক্যাচ দেন এই ওপেনার।


১২.৩ ওভারে ৭৩ রানে ২ উইকেট হারায় পাকিস্তান। তবে বিপদ আর বাড়াতে দেননি বাবর-রিজওয়ান। চেপে ধরার সুযোগ দেননি ভারতীয় বোলারদের। স্বাচ্ছন্দ্যেই বাড়াতে থাকেন রান। ৮২ রান যোগ হয় তাদের যুগলবন্দীতে। এরপরই সিরাজের আঘাত, ফেরেন বাবর। আর ধসে পড়ে পাকিস্তানের ইনিংস।