Image

দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে বড় ব্যবধানে হারল বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড

স্পোর্টস ডেস্ক: ভারত বিশ্বকাপে মুদ্রার উল্টোপিঠ দেখছে ইংল্যান্ড। বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা রীতিমতো ধুঁকছে এবারের আসরে। নিউজিল্যান্ড ও আফগানিস্তানের পর এবার হার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। লড়াই তো বহুদূর, যেন রীতিমতো অসহায় ছিল ইংলিশরা।

মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়েতে এদিন আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ৩৯৯ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। যা তাড়া করতে নেমে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতেই পারেনি ইংলিশরা। গুটিয়ে যায় মাত্র ১৮০ রানে। দক্ষিণ আফ্রিকার জয় ২২৯ রানে।

যেখানে ইংল্যান্ডকে ভাবা হচ্ছিল বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা দাবিদার, সেই ইংলিশরা যেন পায়ের তলার মাটিই খুঁজে পাচ্ছে না। দ্বিতীয় ম্যাচে জয় পেলেও বেশ খারাপভাবে হেরেছে বাকি ম্যাচগুলোতে। আজ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে যা হলো, তা রীতিমতো লজ্জাই বটে।

৪০০ রানের বিশাল লক্ষ্য, যা টপকাতে হলে রেকর্ড গড়তেই হতো থ্রি লায়ন্সদের। বিশ্বকাপে এতো রান তাড়া করে আগে কখনো জেতেনি কোনো দল। ফলে বাটলারদের জন্য যে কাজটা মোটেও সহজ হবে না, তা জানাই ছিলো। তবে এভাবে আত্মসমর্পণ ভাবেনি কেউ, অন্তত প্রতিদ্বন্দ্বিতা আশা করেছিল।

দক্ষিণ আফ্রিকান পেসারদের কোনো জবান খুঁজে পাননি বেয়ারেস্টো-রুটরা। মাত্র ৩৮ রানে হারায় ৪ উইকেট। বেয়ারেস্টো ১২ বলে ১০, মালান ১১ বলে ৬, জো রুট ৬ বলে ২ ও ৮ বলে ৫ রান করেন আসরে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা বেন স্টোকস।

অধিনায়ক জশ বাটলার ও হ্যারি ব্রুক চেষ্টা করেছিলেন খানিকটা প্রতিরোধের। ২৯ রানের জুটি গড়েন দুজনে। তবে তা আর বাড়তে দেননি কোয়েটজে, দু'জনকেই ফেরান এই পেসার। বাটলার ৭ বলে ১৫ ও ব্রুক আউট হন ২৫ বলে ১৭ রানে। ৬৮ রানে ৫ উইকেট হারায় ইংলিশরা।


এরপর ডেভিড উইলির ১২, আদিল রাশিদের ১০ রানে ফিরলে দ্রুত অলআউট হবার শঙ্কা দেখা দেয়। তবে গাস আটকিনসন ও মার্ক উডের হঠাৎ তোলা ঝড়ে তা খানিকটা বিলম্বিত হয়। দুজনের নবম উইকেট জুটিতে আসে ৩৫ বলে ৭০ রান। আটকিনসন ২১ বলে ৩৫ করে আউট হলে থামে ইংলিশদের ইনিংস। মার্ক উড ১৭ বলে অপরাজিত থাকেন ৪৩ রানে।

২২ ওভারে ৯ উইকেটে ১৭০ রান তুলতেই হার মেনে নেয় ইংল্যান্ড। রিস টপলি আর ব্যাট হাতে নামেননি। কোয়েটযে ৩ ও রাবাদা আর জানসেন দুটো করে উইকেট।

এর আগে রেজা হেন্ড্রিকস ও ভেন ডুসেনের জোড়া ফিফটিতে ভালো ভীত পাবার পর হেনরিখ ক্লাসেনের ঝড়ো সেঞ্চুরি আর জানসেনের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে রান পাহাড় তুলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ৩৯৯ রানের সংগ্রহ পেয়েছে দলটি।

মুম্বাইয়ে এদিন টসে হেরে ব্যাট করতে নামে প্রোটিয়ারা। তবে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই কুইন্টন ডি ককের উইকেট হারায় তারা। ৪ রান করে টপলির শিকার হন ডি কক। শুরুর সেই ধাক্কা কাটিয়ে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

প্রোটিয়াদের পথ দেখান রেজা হেন্ড্রিকস ও ভেন ডুসেন মিলে। স্বাচ্ছন্দ্যেই বাড়াতে থাকেন দলের সংগ্রহ। গড়েন শতাধিক রানের জুটি। উভয়েই পান ফিফটির দেখা। ডুসেন ১৯.৪ ওভারে ফিরলেও শতকের পথে এগিয়ে যেতে থাকেন রেজা। তবে সেই স্বাধ পূরণ হয়নি, ৭৫ বলে ৮৫ রানে আদিল রাশিদের শিকার হন রেজা।

এর আগে রাশিদ ফেরান ডুসেনকেও। ভাঙেন দু'জনের মধ্যকার ১২১ রানের জুটি। ৬১ বলে ৬০ রান করেন ডুসেন। এই দুজনে ফিরলেও বড় সংগ্রহের ভীত গড়ে উঠে সেখানেই। যেখান থেকে এগিয়ে নেন হেনরিখ ক্লাসেন। শুরু থেকেই বিধ্বংসী হয়ে উঠেন এই ব্যাটার। প্রথমে মার্করাম ও শেষে তাকে সঙ্গ দেন মার্কো জানসেন।

মার্করাম ৪৪ বলে ৪২ করে আউট হলেও জানসেন মারকুটে ব্যাট করে ছাপিয়ে যান ক্লাসেনকেও। দু'জনে ঝড় তুলেন দু'প্রান্ত থেকে। এর মাঝে ডুসেন শতক তুলে নেন। মাত্র ৬১ বলে পৌঁছান তিন অংকের ঘরে। তবে এরপর ইনিংসটা বড় হয়নি, ৬৭ বলে ১০৯ রান তুলে শেষ ওভারে ফেরেন তিনি। তবে ক্লাসেন আউট হবার আগে জানসেনের সাথে মিলে ৮১ বলে যোগ করেন ১৫১ রান।দু'জনের এমন বিধ্বংসী জুটিতে স্বাভাবিকভাবেই বড় পুঁজি পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে শেষ ওভারে মাত্র ৫ রান আসায় চারশো স্পর্শ করেনি সংগ্রহ। জানসেন অপরাজিত থাকেন ৪২ বলে ৭৫ রানে। ৮৮ রানে ৩ উইকেট নেন টপলি, আটকিনসন নেন জোড়া উইকেট।