Image

সৈয়দপুরে গোডাউন থেকে রেললাইনের মালামাল পাচারের অভিযোগে প্রকৌশলী আটক

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি : নীলফামারীর সৈয়দপুরে রেলওয়ের উর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ) কার্যালয়ের গোডাউন থেকে রাতের আঁধারে রেললাইন ও অন্যান্য মালামাল পাচারের ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে ওই কার্যালয়ের ইনচার্জ সুলতান মৃধাকে আটক করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বিকেলে পার্বতীপুর রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ওই কার্যালয় থেকে তাকে আটক করে। পরে তাঁকে সৈয়দপুর রেলওয়ে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (সন্ধ্যা ৭ টা ) তাঁর বিরুদ্ধে রেলওয়ে থানায় মামলা দায়ের ও বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছিল।

পার্বতীপুর রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ও সৈয়দপুর রেলওয়ে থানা পুলিশের সুত্রে জানা যায়, বুধবার (১৮ জুন) গভীররাতে সৈয়দপুর রেলওয়ে উর্ধ্বতন উপ সহকারী প্রকৌশলী (পথ) কার্যালয়ের গোডাউন ও ইয়ার্ডে সংরক্ষণে থাকা অসংখ্য রেললাইন গ্যাস সিলিন্ডারের মাধ্যমে কাটা হয়। পরে সেসব বিক্রির উদ্দেশ্যে পিকআপ ভ্যানে পাচার করা হয়। 

বৃহস্পতিবার সকালে বিষয়টি চাউর হলে খবরটি চলে যায় রেলওয়ের বিভিন্ন দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কানে। এনিয়ে তাৎক্ষণিক প্রাথমিক তদন্ত চালায় রেলওয়ের সংশ্লিষ্টরা। এতে ওই কার্যালয়ে পিকআপ ভ্যানের চাকার দাগ এবং গোডাউনে গ্যাস সিলিন্ডারের অস্তিত্ব এবং রেললাইনসহ অন্যান্য মালামাল পাচারের আলামত পায় রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ও সৈয়দপুর রেলওয়ে থানা পুলিশ। পরে ওই কার্যালয়ের ইনচার্জ উপ সহকারী প্রকৌশলী সুলতান মৃধাকে আটক করা হয়। 

এ ব্যাপারে রেলওয়ের পার্বতীপুর এলাকার সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী (এ ই এন) মো. তহিদুল ইসলাম বলেন, সৈয়দপুর রেলওয়ের উর্ধ্বতন উপ সহকারী প্রকৌশলী (পথ) কার্যালয়ের গোডাউন থেকে গ্যাসের সিলিন্ডার ও রেললাইন কাটার সরঞ্জাম পাওয়া গেছে। সেখানে গ্যাস দিয়ে কাটা কয়েকটি রেললাইনও দেখা গেছে। ফলে ধারণা করা হচ্ছে ওই গোডাউন থেকে বিপুল পরিমাণ রেললাইন ও অন্যান্য মালামাল পাচার করা হয়েছে।

এ কারণে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ( আরএনবি)  তাঁকে তাঁর কার্যালয় থেকে আটক করেছে। পরে তাঁকে সৈয়দপুর রেলওয়ে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। 

পার্বতীপুর রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর পরিদর্শক হাসান শিহাবুল ইসলাম জানিয়েছেন, কার্যালয়টি পার্বতীপুরের অধীনে থাকায় সুলতান মৃধার বিরুদ্ধে আইনানুগ ও বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে সৈয়দপুর রেলওয়ে থানায় মামলার দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া পাচার করা মালামাল উদ্ধারসহ এ ঘটনার সাথে অন্যান্য যারা জড়িত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

জানতে চাইলে সৈয়দপুর রেলওয়ে থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মাহামুদ- উন- নবী বলেন, মালামাল পাচারের অভিযোগে আটক উপ সহকারী প্রকৌশলী সুলতান মৃধাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে মামলার পর মালামাল উদ্ধার এবং অন্যান্য জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে অভিযান চালানো হবে। 

এদিকে একটি সুত্রে জানা গেছে আটক সুলতান মৃধাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে মালামাল পাচারের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে এসবের ক্রেতা মালামালগুলো কোথায় নিয়ে গেছে তা তিনি জানেন না বলে জানান।

উল্লেখ্য , উপ সহকারী প্রকৌশলী সুলতান মৃধা দীর্ঘদিন থেকে সৈয়দপুরে ওই কার্যালয়ের ইনচার্জের  দায়িত্বে রয়েছেন। আর তখন থেকে রাতের আঁধারে রেললাইনসহ রেলওয়ের অন্যান্য মালামাল পাচার করে আসছিলেন। সে সময় রেলওয়ে শ্রমিকলীগের ওপেন লাইন শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক পদে থেকে তিনি দাপটে এসব করতেন। এরআগেও এমন অনেক অপকর্মে তিনি ধরা খেলেও ক্ষমতার দাপটে রেহাই পেয়েছেন।

এবার অবসরে যাওয়ার ৬/৭ আগে মালামাল পাচারের অভিযোগে আটক হলেন তিনি। এ ঘটনায় ব্যাপক রেলওয়ে অঙ্গনে চাঞ্চল্যের সুৃষ্টি হয়েছে।