
নদীগুলোর নাব্য স্বাভাবিক করতে হবে
- Dec 27 2019 00:45
সারা পৃথিবীর বেশিরভাগ সভ্যতার গোড়াপত্তন হয়েছে নদীপথ ধরে। বিশ্বের অনেক দেশের রাজধানী বড় বড় নদীর তীরে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। শুধু তাই নয়, পৃথিবীর অনেক বিখ্যাত নগরী গড়ে উঠেছে নদীকে আশ্রয় করে। এসব নগরীর উন্নয়নের পেছনে নেপথ্য ভূমিকা রেখেছে নদীপথের পরিবহন ব্যবস্থা। এক কথায় বলা যায়, আদিতে যোগাযোগ ব্যবস্থার যাবতীয় উন্নয়ন হয়েছে নদীপথের নিবিড় সান্নিধ্যে। কিন্তু এখন সেই অবস্থা আর নেই। নানা কারণে নদীগুলো ভরাট হয়ে নাব্য সংকট তৈরি হয়েছে। এ দেশের নদীগুলোও এর ব্যতিক্রম নয়। ফলে প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে ড্রেজিংয়ের। মানবকণ্ঠে প্রকাশিত এক সংবাদে সবিস্তারে বলা হয়েছে, ভরাট হয়ে যাওয়া নদীগুলোয় নৌ-চলাচল বাড়াতে আবার খনন কাজ চালানো হচ্ছে। এ কারণে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে নৌ-বাণিজ্যও বেড়েছে।
সাধারণত অতীত থেকেই নদীগুলোকে ঘিরে গড়ে উঠেছে, হাট-বাজার, নগর-বন্দর। বেড়েছে মানুষে মানুষে যোগাযোগ। পারস্পরিক সম্পর্কে এসেছে ঘনিষ্ঠতা। ব্যবসায়িক পণ্য পরিবহন ও সামাজিক কার্যক্রমের উন্নয়ন হয়েছে। কোনো কোনো সময় প্রসারিত হয়েছে আগের আমলের রাজা-বাদশাদের যাবতীয় শাসন কার্যক্রম। এ দেশের পুরনো রাজধানী সোনারগাঁ এবং আধুনিক রাজধানী ঢাকা তারই উদাহরণ হয়ে রয়েছে।
নদীকে নিয়ে এ দেশের রয়েছে আলাদা ঐতিহ্য। সারাদেশে জালের মতো ছেয়ে আছে শত শত নদী। এ কারণে এই দেশকে নদীমাত্রিকও বলা হয়।
অনেক দেশের স্থলপথে যখন রাস্তা হয়নি, তখন বাসপথ ও রেলপথও হয়নি। এছাড়া আবিষ্কার হয়নি উড়োজাহাজ। তখন উন্নয়নের জয়যাত্রা শুরু হয়েছিল বড় বড় নদীর পথে ধরে।
আবহমান গ্রামবাংলার এই নদীগুলো ছিল অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাক্ষেত্র। এই নদীগুলোকে নিয়ে দেশের অভ্যন্তরে রচিত হয়েছে কত সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক পুরাকাহিনী। কিন্তু এখন মানুষের নানামুখী বিরূপ আচরণে নদীর অমীয়ধারার গতিপ্রকৃতির পরিবর্তন হয়েছে। কোথাও কোথাও দখল হয়েছে নদীর অংশ। দূষিত করা হয়েছে কোনো কোনো নদীকে। জবর-দখল আর দূষণে অনেক নদী আজ নাব্য হারিয়ে প্রায় মৃত। আগের মতো আর নৌযান চলাচল করে না। তাছাড়া মানুষও তৈরি করেছে সড়ক পথ। আকাশ পথেও বেড়েছে যোগাযোগ। যার ফলে জলপথ হারিয়েছে তার আপন ঐতিহ্য। কিন্তু আধুনিক যোগাযোগের এই যুগে এখনো জলপথের গুরুত্ব হারিয়ে যায়নি। ফুরিয়ে যায়নি প্রয়োজনীয়তা। সবচেয়ে সস্তায় পণ্য পরিবহন ও জনপরিবহন নিরাপদে হয় জলপথে।
এই গুরুত্ব অনুধাবন করে সরকার আবার উদ্যোগ নিয়েছে দেশের নদীগুলো ড্রেজিং করার। বর্তমানে ১৬টি নৌরুটে ৩৩টি ড্রেজার ড্রেজিং কাজ করছে। কাজের গতি বৃদ্ধি করতে আবার নতুন করে ২০টি ড্রেজার আমদানি করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যদিও ১৯৭২ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ২৫টি ড্রেজার কেনা হয়েছে। তারপরও বাস্তবতার নিরীক্ষে এসব ড্রেজার কাজের জন্য যথেষ্ট নয়। কিন্তু এবারের উদ্যোগ অতীতের সব প্রচেষ্টাকে ছাড়িয়ে গেছে ব্যয়-বরাদ্দের দিক থেকে; এ খাতের নতুন নতুন উদ্যোগ নৌরুটগুলোতে আনছে প্রাণচাঞ্চল্য।
এক কথায়, ব্যবসা-বাণিজ্যে আরো গতি আনতে এখন সময়ের প্রয়োজনে নদীপথ ব্যবহার আরো অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। তাই ড্রেজিং কাজ মানসম্পন্নভাবে করতে অবশ্যই সঠিক তদারকি প্রয়োজন। আমরা মনে করি, সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ আরো যত্নবান হবে নদীগুলোর রুটগুলো স্বাভাবিক করতে।
মানবকণ্ঠ/টিএইচডি
আরো সংবাদ
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর থানা পুলিশের অভিযানে ৩ বখাটে গ্রেপ্তার
- Dec 27 2019 00:45
সৈয়দপুরে সমাজকল্যাণ পরিষদের আর্থিক অনুদানের চেক হস্তান্তর
- Dec 27 2019 00:45
কালিগঞ্জে মোটরসাইকেল থেকে পড়ে নারীর মৃত্যু
- Dec 27 2019 00:45
সার্চ কমিটি গঠনে অনিয়ম: কালিগঞ্জ উপজেলা বিএনপি'র প্রতিবাদ সভা
- Dec 27 2019 00:45
সর্বশেষ
Weather

- London, UK
13%
6.44 MPH
-
23° Sun, 3 July
-
26° Sun, 3 July