Image

শাহজালাল বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ

আন্তর্জাতিক যোগাযোগের জন্য সুপরিসর বিমানবন্দরের আবশ্যকীয়তা অপরিহার্য। সঠিক সময়ে মানসম্পন্ন যাত্রীসেবা দিতে না পারলে বিমানবন্দরের কার্যতৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ব্যাহত হয় আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্য। বিশেষ করে আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে তৈরি হয় অচলাবস্থা। এতে জাতীয় অর্থনীতিতে নেমে আসে স্থবিরতা। দেশের প্রধান বিমানবন্দর হযরত শাহজালালে এরকমই সীমাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। মানবকণ্ঠে প্রকাশিত এক সংবাদে সেই চিত্র উঠে এসেছে।

প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে, শাহজালাল বিমানবন্দরে যাত্রী হ্যান্ডলিং ক্যাপাসিটি বছরে ৮০ লাখ এবং কার্গো হ্যান্ডলিং ক্যাপাসিটি বছরে দুই লাখ টন। বিমানবন্দরের কার্গো হ্যান্ডলিং ইতোমধ্যে সক্ষমতা হারিয়েছে। এ বছর যাত্রী হ্যান্ডেলিং ক্যাপাসিটি হারানোরও আশঙ্কা করছেন কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে সক্ষমতার চেয়ে বেশি ৯০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেয় দেশের প্রধান এই বিমানবন্দর।

দেশে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের যোগাযোগ সুবিধা চট্টগ্রাম ও সিলেটে থাকলেও এখনো প্রধান বিমানবন্দর হযরত শাহজালালকেই ধরা হয়। রাজধানীকেন্দ্রিক এই বিমানবন্দরে দেশের সঙ্গে বহির্বিশ্বের প্রয়োজনীয় যোগাযোগ হয় বেশি কিন্তু দিন দিন যাত্রী বৃদ্ধি পেলেও পরিসর বাড়ানো সম্ভব হয়নি। এই কারণে তৃতীয় টার্মিনাল তৈরির অনিবার্য আরো জরুরি হয়েছে।

প্রকাশিত সংবাদের এক অংশে বলা হয়েছে, সরকার তৃতীয় টার্মিনাল বিনির্মাণে ইতোমধ্যে উদ্যোগ নিয়েছে। থার্ড টার্মিনাল নির্মাণে ব্যয় হবে ২০ হাজার কোটি টাকা। ২০২৩ সালের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বছরে এক কোটি ২০ লাখ যাত্রীর সেবা প্রদানের সক্ষমতা অর্জন করবে এই বিমানবন্দরটি। প্রায় ৩০ লাখ বর্গফুট জায়গায় টার্মিনালটি নির্মাণ করা হবে। তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ হবে ২ লাখ ২৬ হাজার বর্গমিটার জমির ওপর। নতুন কার্গো ভিলেজের আয়তন হবে ৪১ হাজার ২০০ বর্গমিটার। ভিভিআইপি কমপ্লেক্স হবে ৫ হাজার ৯০০ বর্গমিটারে। সেই পার্কিং অ্যাপ্রোন হবে ৪ লাখ ৯৮ হাজার ৫০০ বর্গমিটারের।

এই সরকারের আমলে অনেক উন্নয়নমূলক কাজ মানুষের প্রচলিত ধারণাকে অতিক্রম করেছে। শাহজালাল বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল বিনির্মাণে প্রয়োজনীয়তার নিরিখে তেমনই একটা বড় কাজ হতে যাচ্ছে। দিন দিন প্রকট হয়ে ওঠা হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের সমস্যাগুলো এতদিন সীমাবদ্ধতার আড়ালে ঢাকা ছিল। সরকারের গোচরীভূত হওয়ায় নতুন উদ্যমে নেয়া হয়েছে তৃতীয় টার্মিনাল বিনির্মাণের উদ্যোগ। এই টার্মিনাল যাত্রী ও কার্গো পরিবহনে নতুন মাইলফলক হতে পারে।

বর্তমানে এই বিমানবন্দর দিয়ে বছরে প্রায় ৯০ হাজার বিমান ওঠানামা করে। এসব বিমানের যাত্রীদের ওঠানামায় বন্দরের সীমাবদ্ধ যখন আরো প্রকট হচ্ছিল তখন সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছে। এই তৃতীয় টার্মিনালকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করতে চারটি প্রতিষ্ঠানকে যৌথভাবে পরামর্শক নিয়োগ দিয়েছে সিভিল এভিয়েশন অথরিটি। এই চারটি প্রতিষ্ঠান হলো, জাপানের নিপ্পন কায়ো, ওরিয়েন্টাল কনসালট্যান্ট গ্লোবাল, সিঙ্গাপুরের সিপিজি কনসালট্যান্ট, বাংলাদেশের ডিজাইন কনসালট্যান্টস লিমিটেড। শুধু তাই নয়, ভবনগুলোর মান সুরক্ষায় এর মধ্যে এভিয়েশন ঢাকা কনসোর্টিয়াম (এডিসি)-এর মাধ্যমে মিতাসুবিশি ও ফুজিটা, জাপান এবং স্যামসাং, কোরিয়া এ তিনটি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান তৃতীয় টার্মিনাল ভবন নির্মাণ কাজের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। শাহজালাল বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক মানের এই তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ সফল হোক এ প্রত্যাশা আমাদের।

মানবকণ্ঠ/আরবি