Image

আসছে শৈত্যপ্রবাহ

কয়েক দিন আগে বয়ে যাওয়া শৈত্যপ্রবাহের মাঝে নতুন মাত্রা যোগ করেছিল শীতবৃষ্টি। এই অনাকাক্সিক্ষত বৃষ্টি জনজীবনকে করে তুলেছিল বিপর্যস্ত কিন্তু গত দুই দিনে হঠাৎ করে গরম বেড়ে যাওয়ায় শীতের মাঝে ছেদ ফেলেছিল গ্রীষ্মের উষ্ণতা আবার গতকালের আগের রাত থেকে সকাল পর্যন্ত শীতবৃষ্টি ও সঙ্গে হিমেল হাওয়া নতুন করে জানান দিয়েছে শীতের তীব্রতা।

নগরীতে ক্ষণিকের জন্য সৃষ্টি করেছিল বর্ষার আবহ। এই অকাল বৃষ্টি কনকনে শীতের হাড় কাঁপানো শিহরণ আরো খানিকটা উসকে দিয়েছিল বটে। মানুষের কানঢাকা টুপি আর মাফলার ভেদ করে শীত হু হু করে ছুটে এসে প্রকাশ করছিল তার নীরব উপস্থিতি।

কিন্তু এখন শীতের প্রকোপ কম থাকলেও এ মাসে আবার আসছে শৈত্যপ্রবাহ। মানবকণ্ঠে প্রকাশিত এক সংবাদে বলা হয়েছে, চলতি মাসে আরো তিনটি শৈত্যপ্রবাহ আসছে এবং এজন্য সরকার আগাম প্রস্তুতি হিসেবে জেলায় জেলায় শীতবস্ত্র পাঠিয়েছে।

এবারের শীতে প্রথম আসা একটি শৈত্যপ্রবাহে রাস্তাঘাটের চালচিত্র হঠাৎ করে খানিকটা বদলে গিয়েছিল। মানুষের সংগ্রহে রাখা গরম কাপড় গায়ে জড়িয়ে অনেককে তখন শীতের সতর্কতা প্রকাশ করতে দেখা গেছে। কোলের শিশুদের জন্য মায়েদের পূর্ব সতর্কতার যেন ছিল না কমতি। গরম কাপড়ের পাশাপাশি মায়েদের চাদরের নিচে মুখ লুকানো অনেক শিশুকে দেখা গেছে অন্য রকম সতর্ক অবস্থানে।

গাঁও-গেরামে অনেকে লুঙ্গির নিচে প্যান্ট পরে শীতকে অভিবাদন তখন জানিয়েছে ভিন্নভাবে- এ যেন শীত মোকাবিলা নয় আলিঙ্গন। অনেকে পরেছিল লুঙ্গি কিন্তু কিংবা প্যান্টের নিচে আরেকটা টাওজার জাতীয় অতিরিক্ত পোশাক। কেউ কেউ আবার কানটুপির ওপর বেঁধেছিল মাফলার। কারো কারো মাথায় দেখা গেছে মুখ অনাবৃত্ত বাঁদরটুপি। রাজধানীর নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে ছিল বাড়তি সতর্কতা। অন্যান্য সময়ের চেয়ে গেল শৈত্যপ্রবাহে মানুষের গায়ে ছিল গরম পোশাকের আধিক্য।

তখন বেশি কষ্ট পরিলক্ষিত হয়েছে সমাজের উপেক্ষিত অংশ সুবিধাবঞ্চিত শ্রেণি বস্তিবাসী মানুষের মাঝে। নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি শীতে কাতর হয়েছিলেন। অনেকে শীতবস্ত্র দাতাদের আগমন পদক্ষেপ না থাকার বিষয়টিকে কটাক্ষ করেছিলেন। তাদের দাতব্য কার্যক্রমকে সময়োচিত নয় বলে মন্তব্য করেছিলেন। আবহাওয়া দফতরের শৈত্যপ্রবাহ ও শীতবৃষ্টির আগাম সতর্কতা থাকার পরও ভরশীতেও দেশজুড়ে শীতবস্ত্র বিতরণের তেমন সন্তোষজনক তৎপরতা শুরুর বিষয়টি অনেকের গোচরীভ‚ত হয়নি। তাই অনেকে ইঙ্গিত দিয়েছেন এই তৎপরতা এখনই শুরু করা প্রয়োজন।

নগরীর বিপণিবিতানগুলোয় গরম কাপড় বিকিকিনির ছিল অন্যরকম আয়োজন। ছিল ক্রেতা সাধারণের ভিড়। রাজধানীর অনেক রাস্তায় দেখা গেছে হাঁকডাক করে গরম কাপড় বিক্রি করতে। বিশেষ করে শীতপ্রধান দেশের ব্যবহƒত শোয়েটার ও জ্যাকেট স্বল্প মূল্যে কেনার ধুম পড়েছিল। মানুষ ভিড় করে কাপড় কিনে জানান দিয়েছিল তীব্র শীতের চলমানতাকে।

প্রতি শীতে বিভিন্ন দাতা প্রতিষ্ঠান দরিদ্র্য মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করে। পাশাপাশি সরকারি আয়োজনেও শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়ে থাকে। অনেক সময় শীতের তীব্রতা কমে যাওয়ার পরও শীতবস্ত্র বিতরণ করতে দেখা যায়। এটা সমাজের অনেকের চোখে অসঙ্গতিপূর্ণ ও সময়োপযোগী মনে হয় না। এ মাসে যে তিনটি শৈত্যপ্রবাহ আসছে, এ জন্য এখনই সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানের বড় ধরনের প্রস্তুতি থাকা দরকার।

মানবকণ্ঠ/এইচকে