
শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন
- Jan 10 2020 00:57
বিজয় এসেছে। বাঙালি জাতি পেয়েছে একটি স্বাধীন দেশ। বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ নামের একটি দেশ সগর্বে স্থান করে নিয়েছে। কিন্তু এই অর্জনের নেপথ্যে যে মহান ব্যক্তিটির নিরঙ্কুশ অবদান তাকে ছাড়া কী এটি অর্থবহ হয়, নাকি হতে পারে?
তাই গোটা জাতি অধীর অপেক্ষায় ছিলেন কবে ফিরবেন অবিসংবাদিত নেতা। কবে পূর্ণতা পাবে বাংলাদেশ নামের দেশটি স্বাধীনতা অর্জন। আজ ১০ জানুয়ারি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দেশ সম্পূর্ণভাবে হানাদারমুক্ত হয়। অবসান ঘটে বাঙালির হাজার বছরের রুদ্ধশ্বাস প্রতীক্ষার। এই অভূতপূর্ব ইতিহাসের যিনি রচয়িতা, যার আহ্বানে মহান মুক্তিযুদ্ধে হাসিমুখে প্রাণ উৎসর্গ করেছে লক্ষ লক্ষ মানুষ, মাথা পেতে নিয়েছে অকল্পনীয় দুঃখ ও ক্লেশ- তাকে ছাড়া সবকিছুই যেন ছিল অপরিপূর্ণ। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিটি হৃদস্পন্দনে তখন ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল সেই শূন্যতার হাহাকার।
সব অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে তিনি ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি স্বাধীন বাংলার মাটিতে পা রাখলেন। পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান লন্ডন-দিল্লি হয়ে আজন্ম লালিত স্বপ্নের স্বাধীন বাংলাদেশের মাটি স্পর্শ করেন পরম মমতায়। সেদিন স্বজনহারানো সর্বস্বান্ত মানুষ হৃদয় উজাড় করে তাদের প্রাণপ্রিয় নেতাকে বরণ করে নিয়েছিল। নেতা ও জনতার আনন্দাশ্রু মিলেমিশে এক অভূতপূর্ব দৃশ্যের অবতারণা হয় যা স্মৃতির আকাশ থেকে কখনো মুছবার নয়।
তবে তিনি খুব সহজেই দেশে প্রত্যাবর্তন করতে পারেননি। স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতির স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পথ ছিল ভয়ঙ্করভাবে কণ্টকাকীর্ণ। মুুক্তিযুদ্ধকালে দীর্ঘ ৯টি মাস বঙ্গবন্ধুকে শুধু যে দুই হাজার মাইল দূরবর্তী পাকিস্তানের নির্জন একটি কারাগারের ‘ডেথ সেলে’ বন্দি করে রাখা হয়েছিল তাই নয়, পাশাপাশি তাকে ফাঁসিতে ঝোলানোর সর্বাত্মক প্রস্তুতিও চলছিল। সামরিক জান্তার গঠিত বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচারের নামে চলছিল প্রহসন। বিশ্বের বহু খ্যাতনামা রাষ্ট্রনায়কসহ অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান। সর্বোপরি বঙ্গবন্ধুর প্রাণ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। প্রিয় মাতৃভূমিতে ফিরে আসার পর বঙ্গবন্ধু রেসকোর্স ময়দানে এক আবেগঘন বক্তৃতায় বলেন যে, তিনি ফাঁসির জন্য প্রস্তুত ছিলেন। বঙ্গবন্ধু এও বলেন যে, এই স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়ে যাবে যদি তার বাংলার মানুষ পেট ভরে খেতে না পায়, মা-বোনেরা কাপড় না পায়। তিনি যদি আজ বেঁচে থাকতেন, তাহলে এশিয়ার ‘রাইজিং টাইগার’ হিসেবে বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখে মুগ্ধ হতেন তো বটেই। কন্যা শেখ হাসিনার সাফল্যে গর্ববোধ করতেন। কারণ আজকের যে বাংলাদেশ এর পুরো কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। তার যোগ্য ও দক্ষ নেতৃত্ব এবং দূরদর্শী পরিকল্পনা, সময়োপযোগী পদক্ষেপেই বাংলাদেশ বিশ্বের বিস্ময় হয়ে দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে।
স্বাধীনতার পর একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে বঙ্গবন্ধু নূতনভাবে গড়ে তোলেন। রক্তক্ষয়ী বিজয়ের পর মাত্র তিন মাসের মধ্যে ভারতীয় মিত্রবাহিনীর নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনে অনন্য নজির স্থাপন করেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নের গোড়াপত্তন করেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের সেই মর্মান্তিক ঘটনার পর সেই উন্নয়নের ধারা বাধাগ্রস্ত হয়। তবে বঙ্গবন্ধু আমৃত্যু যে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখিয়ে গেছেন জাতিকে, তা সফলতা পেতে শুরু করেছে তারই সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে। বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশ। উন্নয়নের রোল মডেল। পাকিস্তানের মৃত্যুকূপ থেকে বঙ্গবন্ধু সেদিন দেশে ফিরেছিলেন বলেই সাফল্যের এই ভিত রচনা করা সম্ভব হয়েছে এই ঐতিহাসিক সত্য প্রজন্ম থেকে প্রজন্মকে জানাতে হবে। তবেই তারা মূল্যায়ন করতে পারবে ইতিহাসের এই বরপুত্রকে।
মানবকণ্ঠ/টিএইচডি
আরো সংবাদ
সুনামগঞ্জে বিজিবি”র অভিযানে ভারতীয় অবৈধ পণ্য আটক
- Jan 10 2020 00:57
নওগাঁর পত্নীতলায় ভটভটি ও পিকআপের সংঘর্ষে পিকআপ চালক নিহত
- Jan 10 2020 00:57
কালিগঞ্জ সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আংশিক কমিটি গঠন
- Jan 10 2020 00:57
সৈয়দপুরে গোডাউন থেকে রেললাইনের মালামাল পাচারের অভিযোগে প্রকৌশলী আটক
- Jan 10 2020 00:57
সর্বশেষ
Weather

- London, UK
13%
6.44 MPH
-
23° Sun, 3 July
-
26° Sun, 3 July