
ধূমপানের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে হবে
- Jan 15 2020 00:30
হাসপাতাল হলো এমন একটি স্থান যেখানে মানুষ সুস্থ হওয়ার জন্য যায় বা প্রয়োজনে অবস্থান করে। কিন্তু সেই হাসপাতাল বা হাসপাতালের আশপাশের পরিবেশ যদি রোগের কারণ ঘটায় তাহলে তা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না, উচিতও না।
১৪ জানুয়ারি দৈনিক মানবকণ্ঠে প্রকাশিত একটি সংবাদে বলা হয়েছে, ঢাকার ৭১ শতাংশ সরকারি হাসপাতালে ধূমপান হয়। ১৩ জানুয়ারি জাতীয় প্রেস ক্লাবে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত এক সেমিনারে এ তথ্য জানানো হয়। সম্প্রতি ঢাকার সরকারি হাসপাতালগুলোতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন পরিস্থিতি জানতে ৫১টি হাসপাতালে এ জরিপ চালানো হয় বলে জানায় এ সংস্থা। সংবাদটি নিঃসন্দেহে অপ্রত্যাশিত এবং উদ্বেগজনক।
শুধু যে হাসপাতাল বা হাসপাতালের আশপাশে ধূমপান করা হয় তা নয়। ধূমপান রোধে আইন করা হলেও উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে প্রকাশ্যে ধূমপানের প্রবণতা। এক সময় গণপরিবহনগুলোতে যাত্রী পরিবহনের সময় চালক বা সহকারী ধূমপান করার সাহস দেখাতো না। কিন্তু ইদানীং তারা এর কোনো কিছুই তোয়াক্কা না করে যাত্রী ভর্তি গাড়িতে প্রকাশ্যে ধূমপান করে পরিবেশ নষ্ট করছে। এছাড়াও ধূমপায়ীদের যন্ত্রণায় পথে স্বস্তির সঙ্গে হাঁটা যায় না। কোনো চায়ের দোকানে দাঁড়ানো যায় না। আইন হওয়ার পর প্রকাশ্যে ধূমপান কমার কথা।
কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে আরো বেড়েছে। এর কারণ হতে পারে আইন থাকলেও এর প্রয়োগ নেই বা আইন হওয়ার পর কিছুদিন তা প্রয়োগ করা হলেও এর ধারাবাহিকতা না থাকা। অথচ আমরা সবাই জানি যে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ উভয় ধূমপায়ী সমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একজন ধূমপায়ীর কারণে যে বা যারা ধূমপান করেন না তারাও ক্ষতির শিকার হবেন এটি হতে পারে না। তাই ধূমপান রোধে সংশ্লিষ্টদের আরো কঠোর অবস্থান নেয়া জরুরি বলে মনে করি।
তামাকজাত দ্রব্যের মধ্যে সিগারেট, বিড়ির মতো ধোঁয়াযুক্ত পণ্যগুলো শুধু সেবনকারীর স্বাস্থ্যেরই মারাত্মক ক্ষতি করে না, আশপাশের মানুষেরও সমান ক্ষতি করে। পরোক্ষ ধূমপানের ফলে ফুসফুসের ক্যান্সার, হৃদরোগ, শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা, স্ট্রোক ও প্রজনন সমস্যা দেখা দিতে পারে। কিন্তু গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে (গ্যাটস) ২০১৭-এ দেখা যায়, হাসপাতালের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানেও প্রায় ১৩ ভাগ মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয়।
জরিপে এক-তৃতীয়াংশ হাসপাতালে কাউকে না কাউকে সরাসরি ধূমপান করতে দেখা যায়। প্রমাণ হিসেবে মেলে সিগারেটের অবশিষ্টাংশ, ধোঁয়ার গন্ধ ইত্যাদি। এছাড়া প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ হাসপাতালে ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহারের প্রমাণ হিসেবে পাওয়া যায় পানের পিক, চুনের দাগ ইত্যাদি। এ বাদে সরাসরি ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহার করতে দেখা গেছে প্রায় অর্ধেক হাসপাতালে।
এছাড়া ঢাকার ৮০ শতাংশ সরকারি হাসপাতালের ১০০ মিটারের মধ্যে তামাকপণ্য বিক্রি হয় বলে জানায় ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন। এমনকি ১৮ শতাংশ হাসপাতালের সীমানার মধ্যেই এমন দোকান রয়েছে। হাসপাতালগুলোতে আগত রোগী ও দর্শনার্থীদের তামাক ছাড়ার ব্যাপারে সহায়তা দিতে তামাক নিবৃত্তকরণ ক্লিনিক থাকা জরুরি।
কিন্তু ৫১টি হাসপাতালের মধ্যে মাত্র একটিতে এ সুবিধা রয়েছে বলে জরিপে দেখা যায়। অথচ এ ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। কিন্তু তা তারা করছেন এমন তথ্য নেই। এই যদি হয় সার্বিক চিত্র সে ক্ষেত্রে আতঙ্কিত হওয়া ছাড়া বিকল্প নেই। তবে সময় যে একেবারে চলে গেছে তা নয়, এখনও ত্বরিত গতিতে সম্মিলিত প্রচেষ্টা নিলে ধূমপানজনিত ক্ষতি থেকে জনগণকে রক্ষা করা সম্ভব। সংশ্লিষ্ট সব মহল এ ব্যাপারে দ্রুত উদ্যোগ নেবে বলে প্রত্যাশা করি।
মানবকণ্ঠ/টিএইচডি
আরো সংবাদ
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর থানা পুলিশের অভিযানে ৩ বখাটে গ্রেপ্তার
- Jan 15 2020 00:30
সৈয়দপুরে সমাজকল্যাণ পরিষদের আর্থিক অনুদানের চেক হস্তান্তর
- Jan 15 2020 00:30
কালিগঞ্জে মোটরসাইকেল থেকে পড়ে নারীর মৃত্যু
- Jan 15 2020 00:30
সার্চ কমিটি গঠনে অনিয়ম: কালিগঞ্জ উপজেলা বিএনপি'র প্রতিবাদ সভা
- Jan 15 2020 00:30
সর্বশেষ
Weather

- London, UK
13%
6.44 MPH
-
23° Sun, 3 July
-
26° Sun, 3 July