
শ্রমবাজার ধরে রাখার উপায় খুঁজতে হবে
- Jan 16 2020 00:33
দেশে চাকরি নেই। শিক্ষিত, কর্মক্ষম এক বিরাট অংশ কর্মহীন। দিন দিন এরা পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের বোঝা হয়ে উঠছে। রাষ্ট্র এই বিপুল জনগোষ্ঠীকে জনশক্তিতে পরিণত করতে পারছে না। যে কারণে যে যেভাবে পারছে দেশে বিদেশে কর্মের ব্যবস্থা করে যাচ্ছে।
অনেকে কোনো কূল কিনারা করতে না পেরে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে নিজেকে যুক্ত করছে। একদিকে বেকারত্বের হতাশা, অন্যদিকে অবৈধভাবে মোটা অঙ্কের টাকা কামাইয়ের লোভে তারা বিপথে পা দিচ্ছে। বেকারদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়েও অনেকে তাদের অন্যায়ভাবে ব্যবহার করছে।
বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই পাড়ি দিচ্ছেন বিদেশে। কিন্তু আমাদের দেশ থেকে শ্রমিক নেয় যেসব দেশ তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। কিন্তু ১৫ জানুয়ারি দৈনিক মানবকণ্ঠে প্রকাশিত একটি সংবাদ অনুযায়ী, বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য দীর্ঘদিন থেকে সঙ্কুচিত হয়ে আছে মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজার। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক মন্দাসহ নানা কারণে বিগত কয়েক বছর থেকেই ভুগতে হয়েছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের।
অধিকাংশ দেশই বাংলাদেশ থেকে নিচ্ছে না কোনো শ্রমিক। আবার দু’একটি দেশ বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিলেও তাদের প্রবাস জীবন সুখকর নয়। বাংলাদেশ থেকে শ্রমিকও নিচ্ছে কম। সব মিলিয়ে সংবাদটি সুখকর নয়। কারণ প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের নিয়ামক শক্তি। দেশের অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়লে তা সবার জন্যই অমঙ্গলকর।
নানা কারণে টানা সাত বছর কর্মী নিয়োগ বন্ধ রাখার পর ২০১৫ সালে বাংলাদেশের জন্য বাজার খুলে দেয় সৌদি আরব। ২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় চাকরির বাজার সৌদি আরবে প্রায় ১৩ লাখ বাংলাদেশি কাজের সুযোগ পায়। তবে জানা গেছে, অভ্যন্তরীণ বেকারত্ব কমাতে ১২ ধরনের কাজে কোনো বিদেশি কর্মী নেবে না সৌদি সরকার।
অন্যদিকে গত বছরের শুরু থেকেই সৌদি শ্রমবাজারে শুরু হয় অস্থিরতা। বিশেষ করে নারী শ্রমিকদের প্রবাস জীবন সুখকর হয়নি। নিয়োগকর্তা কর্তৃক শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে দেড় সহস্রাধিক শ্রমিক দেশে ফিরেছেন। আর গত বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত পুরুষ শ্রমিক ফিরেছেন ২৪ হাজার ২৮১ জন। তাদের অধিকাংশ শ্রমিকই অভিযোগ করেন আকামা (কাজের অনুমতিপত্র) থাকা সত্ত্বেও তাদের আটক করে দেশে পাঠিয়েছে সৌদি পুলিশ। এ ক্ষেত্রে দুর্বল ক‚টনৈতিক তৎপরতাও দায়ী বলে ভাবছেন সংশ্লিষ্টরা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশ্বের মার্কেটে কম দক্ষ বা আধাদক্ষ শ্রমিকদের চাহিদা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। আমরা তাদের চাহিদা অনুযায়ী যুগোপযোগী কর্মী তৈরি করতে পারছি না। এজন্যও শ্রমবাজার হারাতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। এর জন্য বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থাও অনেকটা দায়ী বলে মনে করেন অভিজ্ঞজনরা। কারণ আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা দক্ষ কর্মী গড়ে তুলতে পারছে না।
দক্ষ কর্মী গড়ে তুলতে পারলে মধ্যপ্রাচ্য ছাড়াও উন্নত দেশগুলোতে জনশক্তি রফতানি করা সম্ভব হতো। আমাদের দ্বিমুখী শিক্ষাব্যবস্থার (ভোকেশনাল ও মূলধারা) কারণে মূলধারা থেকে যে পাস করে সে দক্ষতা পায় না আর যারা ভোকেশনালে আসছে তাদের সংখ্যা খুব সামান্য। যে কোনো রাষ্ট্রই দীর্ঘদিন একটি বাজারে শ্রমশক্তি পরিচালনা করতে করতে অন্য বাজারে চলে যায়। বাংলাদেশকেও নতুন বাজারে যেতে হবে।
নতুন বাজারে যাওয়ার জন্য দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে পরিবর্তন করতে হবে। গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। ভোকেশনালকে মূলধারার শিক্ষার অংশ হিসেবে করে নিতে হবে। তাহলেই ভালো ফল পাওয়া সম্ভব। সুতরাং শ্রম বাজার ধরে রাখতে হলে সমস্যার কেন্দ্রে নজর দিতে হবে। সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে যথেষ্ট সজাগ রয়েছেন বলে আমরা বিশ্বাস করি।
মানবকণ্ঠ/টিএইচডি
আরো সংবাদ
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর থানা পুলিশের অভিযানে ৩ বখাটে গ্রেপ্তার
- Jan 16 2020 00:33
সৈয়দপুরে সমাজকল্যাণ পরিষদের আর্থিক অনুদানের চেক হস্তান্তর
- Jan 16 2020 00:33
কালিগঞ্জে মোটরসাইকেল থেকে পড়ে নারীর মৃত্যু
- Jan 16 2020 00:33
সার্চ কমিটি গঠনে অনিয়ম: কালিগঞ্জ উপজেলা বিএনপি'র প্রতিবাদ সভা
- Jan 16 2020 00:33
সর্বশেষ
Weather

- London, UK
13%
6.44 MPH
-
23° Sun, 3 July
-
26° Sun, 3 July