Image

সৈয়দপুরে আওয়ামী লীগের সাত নেতাকর্মী গ্রেফতার

মিজানুর রহমান মিলন, সৈয়দপুর : সৈয়দপুরে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতারের নির্দেশনা দিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। নতুবা কেউ এখানে থাকতে পারবে না। তার নির্দেশনার পরই নড়েচড়ে বসে পুলিশ। পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকতাদের দিক নির্দেশনা নিয়ে সৈয়দপুর থানা পুলিশ বৃহস্পতিবার রাত থেকে গতকাল শুক্রবার ভোর পর্যন্ত চালানো হয় অভিযান। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ওই নির্দেশনার মাত্র ১২ ঘন্টায় সৈয়দপুরে আওয়ামীলীগের ৭ জন নেতাকর্মী ও সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়েছে। থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মো. ফইম উদ্দিনের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করেন পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) নয়ন রায়। থানা পুলিশ ছাড়াও সদর পুলিশ ফাঁড়ি,গোলাহাট পুলিশ ফাঁড়ির অফিসার ও সদস্যরা পৃথক পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ দপ্তর সম্পাদক মো. ফয়েজ আহমেদ (৪৮), পৌর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক মো. আমিনুল ইসলাম (৪৮), সৈয়দপুর রেলওয়ে শ্রমিক লীগের প্রচার সম্পাদক মো. মাহবুব আলম (৩৮), একই সংগঠনের সদস্য আলতাফ হোসেন (৫৪), আওয়ামী লীগ কর্মী মো. রশিদুল হক (৪৩), মো. সাজিদুর ইসলাম ওরফে সাজু মোল্লা (৩৩) ও মো. জুলফিকার আলী (৪৬)। তাদেরকে শহরের পাঁচমাথা মোড়সহ বিভিন্ন এলাকার নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। 

এদের মধ্যে শুধুমাত্র মাহবুব আলম বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে হামলা, ও সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় মো. শেখ আশিফুর রহমান বাবলুর দায়ের করা মামলার ৭১ নম্বর এজাহারভূক্ত আসামী। বাকীরা মামলার তদন্তে পাওয়া সন্দিগ্ধ আসামী হিসেবে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। 

শুক্রবার (৯ মে) সকালে আসামীদের আদালতের মাধ্যমে নীলফামারী জেলা কারাগারে প্রেরন করা হয়েছে। সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ফইম উদ্দিন আসামীদের গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, অন্যান্য আসামীদেরও গ্রেফতারে পুলিশ তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। 

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (৮ মে) দিনাজপুরে সরকারি সফরে এসেছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি সন্ধ্যায় ঢাকা ফেরার জন্য সৈয়দপুর বিমানবন্দরে সড়কে পৌঁছলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শতাধিক শিক্ষার্থী  তাঁকে বহন করা গাড়ীর গতিরোধ করেন। এ সময় ছাত্ররা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে প্রশ্ন করেন কেন আওয়ামী লীগের পদধারী নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও কেন তাদের গ্রেফতার করছে না পুলিশ। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সেখানে উপস্থিত পুলিশের রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি সহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ প্রদান করেন। এতে ব্যর্থ হলে কেউ এখানে থাকতে পারবেন না। এমন নির্দেশের পরেই বৃহস্পতিবার রাত থেকে গতকাল শুক্রবার সকাল পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে  আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের উল্লিখিত ৭ জন নেতাকর্মী ও সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়।