Image

আর্চারিতে সোমা-সোহেলের সোনালি হাসি

দক্ষিণ এশিয়ান গেমসের (এসএ গেমস) আর্চারিতে দুই একক ইভেন্টে সোনা জিতলেন সোমা বিশ্বাস ও সোহেল রানা। কম্পাউন্ড মহিলা একক ইভেন্টে বাজিমাত করেন সোমা। আর সোহেলের শ্রেষ্ঠত্ব পুরুষ কম্পাউন্ড এককে।

নেপালের কাঠমান্ডু-পোখারার চলতি আসরে এটি নিয়ে মোট ১৬টি সোনা জিতল বাংলাদেশ। বিদেশের মাটিতে প্রতিযোগিতার ইতিহাসে এটাই দেশের সেরা সাফল্য। আগেরটি ছিল ১৯৯৫ সালে মাদ্রাজে পাওয়া ৭টি সোনা। হাতছানি আছে ২০১০ সালে সর্বোচ্চ ১৮ সোনা জয়কে ছাড়িয়ে নতুন উচ্চতায় ওঠার।

সোমবার সকালে পোখারা আর্চারি স্টেডিয়ামে মেয়েদের কম্পাউন্ডের একক ইভেন্টে সোনা জেতেন টঙ্গীর মেয়ে সুমা বিশ্বাস। ফাইনালে সুমা ১৪২-১৩৪ পয়েন্টে হারিয়েছেন শ্রীলঙ্কার অনুরাধাকে। রোববার সুস্মিতা বণিক ও শ্যামলী রায়কে নিয়ে কম্পাউন্ড মহিলা দলগত বিভাগেও সোনা জিতেছিলেন এই আর্চার।

সোনা জয়ের আনন্দের কান্না কিছুতেই থামছিল না। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রাজীব উদ্দীন চপল ও সহকারী কোচ জিয়াউর রহমান পাশে দাঁড়িয়ে সুমাকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। এবারের এসএ গেমসে সুমা খেলতে আসেন চতুর্থ বাছাই খেলোয়াড় হিসেবে। সেরা তিনজন ছিটকে পড়েছেন আগেই। কিন্তু যোগ্যতা দিয়ে সুমা উঠে গেছেন ফাইনালে।


মিরপুর সরকারি বাংলা কলেজের স্নাতকের ছাত্রী সুমা। পরীক্ষার কারণে গেমসে খেলতে আসতে পারবেন কিনা তাই নিয়ে ছিল অনিশ্চয়তা। শেষ পর্যন্ত সুমার পরীক্ষা শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে ফেডারেশন। নির্ধারিত সূচি থেকে একদিন পিছিয়ে নেপালে আসেন খেলোয়াড়েরা। সুমা জানতেন কিছু করবেন। কোচ ও কর্মকর্তাদের আস্থার প্রতিদান দিতে পেরে সুমা খুব খুশি, ‘আমার এই কান্না আনন্দের। আমি এখানে আসতেই পারতাম না। স্যারেরা, কোচ আমাকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখেন। আমার ওপর আস্থা রাখেন। আজ আমি সোনা জিততে পেরেছি। খুব ভালো লাগছে।’

গত নভেম্বরে পরীক্ষার কারণে খেলতে যেতে পারেননি ব্যাংককের এশিয়ান আর্চারি চ্যাম্পিয়নশিপে। কিন্তু এসএ গেমসে খেলার জন্য ধনুর্ভঙ্গ পণ করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত অন্নপূর্ণার কোলে নিজের সেরা পারফরম্যান্স করলেন সুমা।

এছাড়াও পুরুষ কম্পাউন্ড এককের ফাইনালে ১৩৭-১৩৬ স্কোরে ভুটানের প্রতিযোগীকে হারিয়ে সোনার পদক জিতে নেন সোহেল রানা। অসীম কুমার দাস ও মোহাম্মদ আশিকুজ্জামানকে নিয়ে রোববার কম্পাউন্ড পুরুষ দলগত ইভেন্টেও সোনা জিতেছিলেন এই আর্চার।

আগের দিন রিকার্ভ পুরুষ দলগত ইভেন্টে রোমান সানা, মোহাম্মদ তামিমুল ইসলাম ও মোহাম্মদ হাকিম আহমেদ রুবেল সোনার পদক জয় করেন। তারা ৫-৩ সেট পয়েন্টে শ্রীলঙ্কাকে হারান।

রিকার্ভ মহিলা দলগত ইভেন্টের ফাইনালে ইতি খাতুন, মেহনাজ আক্তার মনিরা ও বিউটি রায় ৬-০ সেট পয়েন্টে জিতে এনে দেন দ্বিতীয় সোনা। রিকার্ভ মিশ্র দলগত ইভেন্ট থেকে আসে তৃতীয় সোনা।

কম্পাউন্ড মিশ্র দ্বৈতে জুয়েল রানা-রোকসানা আক্তার জুটি স্বাগতিক নেপালের জুটিকে ১৪৮-১৪০ ব্যবধানে হারিয়ে ষষ্ঠবারের মতো সোনার হাসি এনে দেন।

মানবকণ্ঠ/এইচকে