Image

বিদেশী শিক্ষার্থী পড়ার মত অবকাঠামো গড়ে উঠেনি কুবিতে

দেখতে দেখতে ১৩ বছর গত হলো কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের। এই ১৩ বছরের মধ্যে মাত্র ৪ জন বিদেশী শিক্ষার্থী অধ্যায়ন করেছে এখানে। এরপর আর কোন বিদেশী শিক্ষার্থী নেই কুবিতে। বর্তমানে বিদেশী শিক্ষার্থীবিহীন চলছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।

বিদেশী শিক্ষার্থী না থাকার কারণ হিসেবে স্বয়ং কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি জানিয়েছেন, বিদেশী পড়ার মত সুযোগ সুবিধা এখনো গড়ে উঠেনি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের মন্তব্য,অবকাঠামো গড়ে না উঠার পেছনে কুবি প্রশাসনের অবহেলাই দায়ী।

তাদের বক্তব্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটটি ঠিকমত পরিচর্যা করলেও আজ বিদেশী শিক্ষার্থীবিহীন থাকতো না কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।

জানা যায়, ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠার ১৩ বছর পেরিয়ে গেলেও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে চারজন বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শেষ করে। বর্তমানে কোন বিদেশি শিক্ষার্থী ছাড়া শিক্ষা কার্যক্রম চলছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা ও অবকাঠামো না থাকায় বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হচ্ছে না মনে করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে তিনজন এবং ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে একজন নেপালের শিক্ষার্থী ভর্তি হন। এই চারজন ছাড়া আর কোনো বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয়নি। বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা এবং প্রচার-প্রচারণার অভাবকেই দায়ী করছেন বিশ্ববিদ্যালয়টিতে পড়ুয়া সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বাংলাদেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি ও প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা থাকলেও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্র ভিন্ন। এখানে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম আবাসনের ব্যবস্থাও নেই জানান প্রত্নতত্ত বিভাগের এক শিক্ষার্থী।

'বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়েবসাইট সাবজেক্টের নাম আছে কিন্তু এর অধীনে কোন কোর্সগুলো পড়ানো হবে, কোর্সের মেয়াদ কত বছর, কোর্স কো-অর্ডিনেটর সম্পর্কে কোন তথ্য থাকে না। ফলে বিদেশী শিক্ষার্থীদের কোন ধরনের আগ্রহ জন্মে না। ওয়েবসাইটে তথ্যের হালনাগাদ করা হয় অনেক দেরিতে। অথচ একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এটি হালনাগাদ হওয়ার দরকার প্রতি মুহুর্তে। এ জন্য যে খুব বেশী অর্থের প্রয়োজন তা নায়। শুধু একটু সদিচ্ছার দরকার। মাত্র একজন লোক চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ করলেই এই সমস্যাটি সমাদান হওয়ার কথা।

বিগত চার বছরে ভর্তি পরীক্ষার তথ্য ছাড়া আমার আর কোন কাজে আসেনি এ ওয়েবসাইট বলে অভিযোগ করেছেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতার শিক্ষার্থী এমডি কুতুব উদ্দিন।'

মার্কেটিং বিভাগের আবদুল কুদ্দুছ বলেন,কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটটি ওয়েব সাইট না বলে ওয়েট সাইট বলা উচিত।কারণ, এটি কালে ভাদ্রে ছাড়া কোন হাল নাগাদ নেই।

গনিতে উম্মে সালমা মরিয়ম বলেন, শুধু বিদেশী শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করার জন্য নয়,আমাদের প্রয়োজনই ওয়েবসাইটটি হাল নাগাদ করা উচিত।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. আবু তাহের জানান, 'শিক্ষা মন্ত্রণালয়ই বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্ধারণ করে দেয়। তবে জাতীয় পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় বিদেশি শিক্ষার্থীরা আবেদন করতেও পারেনা।'

বিদেশি শিক্ষার্থী না আসার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. এমরান কবীর চৌধুরী বলেন, 'কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থী আসার মতো সুযোগ-সুবিধা এখনও গড়ে উঠেনি। বিদেশি শিক্ষার্থী আসার জন্য পরিবেশ সৃষ্টি করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। বিদেশি শিক্ষার্থীদের আবাসনসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধার গড়ে তোলা হবে বলে জানান তিনি।'

মানবকণ্ঠ/এআইএস