Image

সেবার নামে স্বেচ্ছাচারিতা: শ্যামনগরের ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল নিয়ে বিস্তর অভিযোগ

ন্যাশনাল ডেস্ক: রাতারাতি খ্যাতি পাওয়া সাতক্ষীরার  শ্যামনগরের ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালটি চরম অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও  অব্যবস্থাপনার মধ্যে চলছে। তিন ব্যক্তির সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে  হাসপাতালটি। ইচ্ছামতো চাকরিচ্যুতি,স্থানীয়দের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, কারণে অকারণে কর্মচারীদের স্যালারি কাটা আরো কিছু বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের খবর বেরিয়ে আসছে। 

ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল নির্মাণ লক্ষ্যে  ৬ বিঘা জমি দান করেন সোয়ালিয়া গ্রামের বিদ্যুৎ বিভাগের উচ্চপদস্থ  কর্মকর্তা  মৃত  কওছার আলী গাজী।যার মুল্য কয়েক  কোটি টাকা ।  সাধারণ খেটে খাওয়া অসহায় মানুষ প্রায় বিনামূল্যে  (২০ টাকা টিকিটে ) বিদেশি ডাক্তার দ্বারা এলাকার মানুষ চিকিৎসা পাবেন। এই লক্ষ্যে জমি দান করার পর  কওসার গাজী  জুমার দিনে সোয়ালিয়া দারুস সালাম জামে মসজিদে এলাকার মুসল্লিদের এই সমাজ সেবামূলক কাজের জন্য তিনি তার মূল্যবান জমি দান করার কথা জানান।   হাসপাতাল নির্মাণ চলাকালে  কাউসার গাজী সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হলে সব চুক্তি পাল্টে দেয় ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ছয় বিঘা জমি দান করার পরও স্বপ্ন পূরণ হলো না মৃত কাউসার গাজীর । ভিআইপি পারসন ছাড়া এই হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার ক্ষমতা নেই সাধারণ অসহায় গরিব মানুষের। চিকিৎসা নিতে গেলে অতিরিক্ত বিল ধরিয়ে দেন সাধারন মানুষের হাতে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই হাসপাতালের একজন চিকিৎসক জানিয়েছেন, হাসপাতালে জমি দানকারী মরহুম কওসার আলী গাজীর সাথে  চুক্তি মোতাবেক এই হাসপাতালে ছয় বিঘা জমির উপর হাসপাতালের কার্যক্রম ব্যতীত অন্য কোন কার্যক্রম করা যাবে না কিন্তু আলোচিত শাহীন খুব সামান্য জায়গায় হাসপাতাল পরিচালনা করে বাকিটা রেস্টুরেন্ট গেস্ট হাউজ বানিয়ে ভাড়া দেন। তিনি এই হাসপাতালটি রিসোর্ট বানাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। 

হাসপাতালটি বিতর্কিত করার মূল হোতা শাহিন  সে নন মেডিকেল পারসন,  পদবী হচ্ছে হসপিটাল কোঅর্ডিনেটর। এম আই এস কাজ করে পলাশ, এজিএম অসীম রোজারিও এদের এই সিন্ডিকেট চুরির দায় নিয়ে একবার এই হাসপাতালের  ডিরেক্টর কে তাড়িয়ে ছিল। এই  ভয়ে বর্তমান ডিরেক্টর এখন এদের গোলাম হয়ে গেছে।  ওদের হাতের পুতুল। যেভাবে নাচায় ডিরেক্টর  সেভাবেই নাচেন শুধু চাকরি বাঁচানোর জন্য। 

স্বাস্থ্যক্ষেত্রে চরম অব্যবস্থাপনা যেমন এনেসথেসিয়া  ছাড়াই অহরহ অপারেশন চলছে। এ্যানাস্থেসিওলজিস্ট আসেনা অথচ তার নাম লিখে দেয়। কোনরকমে রোগী ভর্তি করতে পারলেই  অযথাচিত বিল তাদের হাতে ধরিয়ে দেয়া হয়। চোখের যে ডাক্তার বলা হয় সে আসলে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নন ট্রেইনার শুধু সদ্য পাশ করা   এমবিবিএস ডাক্তার। 

অদক্ষ জনবল দিয়েই চলছে হসপিটাল। বিদেশীদের চোখে ধুলো দিয়ে এভাবে কোটি কোটি টাকা তছরুপ চলছে। চলছে লুটপাটের মহোৎসব। গাইনিতে অভিজ্ঞ ডাক্তার রুমানা চৌধুরী থাকলেও তাকে বসিয়ে রেখে ডাক্তার কল্লোলকে দিয়ে সিজার করানো হয়। সেখান থেকে নির্ধারিত হারে পার্সেন্টেজ নেয় শাহিন।

হাসপাতালের সকল অপকর্মের হোতা শাহীনের ইন্ধনে সিনিয়র স্টাফ নার্স কাঙ্ক্ষিতা, মিড ওয়াইফ পার্বতী, রিসিপশনিষ্ট ঝরনা, ওয়ার্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট বুলবুলি, সুপ্তি, সেলিনা, ক্লিনার মহাসিন, কিচেন বয়  আফজালকে কোন কারণ ছাড়াই বিনা অপরাধে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এদের অধিকাংশই স্থানীয়।

বিদেশীদের প্রতিশ্রুতি থাকে ফ্রি চোখের চিকিৎসা দেয়া এরা টাকার বিনিময়ে চোখ অপারেশন করে। চিকিৎসার নামে চলছে চরম ধোঁকাবাজি।

এ ব্যাপারে হাসপাতালে পরিচালক লেফটেন্যান্ট  কর্নেল ডাক্তার মুজাহিদুল হক (অব:)আমি ক্যান্সারের পেসেন্ট অপারেশন হয়েছি। এই হাসপাতালটি আপনাদের শ্যামনগরের মানুষের  গর্বের জায়গা। কোন অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে আমি ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে আলাপ করে ব্যবস্থা নেব।