Image

ক্যাম্পবাসীদের উচ্ছেদ বন্ধ, বিদ্যূৎ সরবরাহ ও মর্যাদাপূর্ণ পুর্নবাসনের দাবি

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি : দেশের বিভিন্ন ক্যাম্পে বসবাসকরা উর্দূূভাষী জনগোষ্ঠীদের আবাসস্থল থেকে উচ্ছেদ বন্ধ, বিদ্যূৎ সরবরাহ ও মর্যাদাপূর্ণ পুর্নবাসনে প্রধান উপদেষ্টার কাছে একটি লিখিত আবেদন  দেওয়া হয়েছে।

সৈয়দপুরস্থ সামসুল হক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও উর্দূ স্পোকিং পিপলস্ ইয়ূথ রিহেবিলিটেশন মুভমেন্ট এর ( ইউএসপিওয়াইআরএম) প্রধান উপদেষ্টা মো. আশরাফুল হক বাবু সাগর গত ১৯ জুন প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে ওই আবেদনটি করেন।

আবেদনপত্রে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্যাম্পে দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছর যাবৎ প্রায় চার লাখ উর্দূভাষী (বিহারী) জনগোষ্ঠী বসবাস করছেন। এই সব উর্দূভাষীদের বিষয়ে বিগত ১৯৭২ সালে তৎকালীন সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থা রেডক্রস সোসাইটির মধ্যে একটি লিখিত চুক্তি হয়। এতে বলা হয় মানবিক সমস্যাদির স্থায়ী কোন সমাধান না হওয়া পর্যন্ত তাদের আবাসস্থল থেকে কোন রকম উচ্ছেদ করা যাবে না। সেই সঙ্গে মানবিক দিক বিবেচনায় তারা বিনামূল্যে বিদ্যূৎ ব্যবহার করতে পারবে। এরই প্রেক্ষিতে সে সময় সরকার সারাদেশের জেলা প্রশাসকদের একটি নির্দেশনা দেন। নির্দেশনা বলা ছিল উর্দূভাষী জনগোষ্ঠীর লোকজন যেখানে যে অবস্থায় রয়েছেন এবং সরকার প্রদত্ত যেসব সুবিধাদি ভোগ করছেন তা করতে পারবেন। 

প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে দেওয়া আবেদনে বলা হয়, যেহেতু অদ্যাবধি উর্দূভাষীদের পুর্নবাসনে কোন কার্যকরী পদক্ষেপ  গ্রহন ও অন্যান্য সমস্যার কোন রকম সমাধান করা হয়নি,সেহেতু তারা বিগত ১৯৭২ সালের পরবর্তী সকল সরকারের শাসনামলে সরকার কর্তৃক প্রদত্ত সব সুযোগ সুবিধাদি ধারাবাহিকভাবে ভোগ করে আসছেন। কিন্তু এর পরও সরকারের কোন কোন বিভাগ যেমন- রেলওয়ে, বিদ্যূৎ ও গণপূর্ত তাদের প্রশাসনিক চাপের কারণেই হোক কিংবা অন্য কোন কারণেই হোক ক্যাম্পবাসী উর্দূভাষীদের সরকারের দেওয়া সুবিধাদি প্রদানে নানাভাবে হয়রানি করে থাকে। আবার কখনও কখনও রেলওয়ে ও সরকারি জমি থেকে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা এবং কখনও কখনও বিদ্যূৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার হুমকি-ধমকি দিয়ে তাদের জীবনযাপনকে অতিষ্ঠ করে তুলছে। বিষয়গুলো নজরে আনাসহ প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ চেয়ে ওই আবেদনে বিদ্যূৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে একটি প্রস্তাবনা রাখা হয়েছে। এই প্রস্তাবনায় বলা হয়, ক্যাম্পবাসী উর্দূভাষী ব্যবসায়ীদের মধ্যে যারা ব্যবসায়িক কাজে বিদ্যূৎ ব্যবহার করছেন, তাদের নামে বিদ্যূতের মিটার সরবরাহের ব্যবস্থা করা হোক। আর ক্যাম্পে যে সব অসহায় দুস্থ, দিনমজুর পরিবার বসবাস করছেন মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের আট বাই আট আয়তনের একটি কক্ষের জন্য একটি বাল্ব ও একটি পাখা বিনামূল্যে ব্যবহারের সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব রেখে প্রধান উপদেষ্টা কাছে দেওয়া ওই আবেদনে আরো বলা হয়, বিগত ২০০৮ সালে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের ঐতিহাসিক রায়ের মাধ্যমে ক্যাম্পবাসী উর্দূভাষীদের বাংলাদেশী নাগরিকত্ব সুনিশ্চিত করায় তারা ভোটাধিকার প্রয়োগ করে আসছেন। ফলে তারা বাংলাদেশী ও তাদের পুর্নবাসনে কোন আইনগত সমস্যা নেই।

তাই প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে সংগঠনের চেয়ারম্যান ও ইউএসপিওয়াইআরএম এর প্রধান উপদেষ্টা মো. আশরাফুল হক বাবু সাগর এর করা ওই আবেদনে উর্দূভাষীদের উচ্ছেদ প্রক্রিয়া বন্ধ রাখাসহ বিদ্যূৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন না করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এদিকে ক্যাম্পে বসবাসকরা উর্দুভাষীদের পক্ষে বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে আবেদন করায় সৈয়দপুরে ক্যাম্পে বসবাসকারী বাসিন্দারা সামসুল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও ইউএসপিওয়াইআরএম এর প্রধান উপদেষ্টা আশরাফুল হক বাবুকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।