Image

সৈয়দপুরে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে বেগম খালেদা জিয়ার গায়েবানা জানাজা

মিজানুর রহমান মিলন, সৈয়দপুর থেকে : বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র, চিরসংগ্রামী ও খাঁটি দেশপ্রেমিক অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়ে যাওয়া আপসহীন নেত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সারাদেশের মত সৈয়দপুরেও নেমে এসেছে শোকের ছায়া। তাঁর মৃত্যুতে শুধু রাজনীতিকরাই নয়, সর্বস্তরের সাধারণ মানুষও স্তব্দ।

মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোরে সবাইকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে না ফেরার দেশে চলে যান বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নের পথপ্রদর্শক বেগম খালেদা জিয়া। দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রীর মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে বিদ্যুতের গতিতে। খবরটি শোনার পর মানুষ যে যেখানে ছিল সেখানেই দাড়িয়ে যায়। থেমে যায় সকল কোলাহল। দেশের সবগুলো টিভি চ্যানেল,অনলাইন পোর্টালে বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যু সংবাদ প্রচারের পাশাপাশি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে বেগম খালেদা জিয়ার আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরা হয়। 

সৈয়দপুরসহ আশেপাশের জেলা উপজেলায় সর্বস্তরের মানুষজনও বেগম জিয়ার মৃত্যুর সংবাদে শোকে পাথর হয়ে যায়। সকাল থেকে সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা বিএনপির কার্যালয়ে জড়ো হতে থাকেন বিএনপিসহ অঙ্গদলের নেতাকর্মী। সাধারণ জনতাও ভীড় করেন সেখানে। এসময় কান্নার রোল পড়ে। সেখানে দলের নেতৃবৃন্দ সকলকে শান্তনা দিতে থাকেন। মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে  জেলা বিএনপিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী যে যেভাবে পেরেছেন  মহান নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে ঢাকায় রওয়ানা দেন। 

এদিকে বুধবার দুপুরে ঢাকায় বেগম খালেদা জিয়ার জানাজার পর সৈয়দপুরে আছরের নামাজের পর শহরের শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কস্থ বিএনপি কার্যালয়ের সামনে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিএনপিসহ দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী সমর্থক ছাড়াও জামায়াতে ইসলামী,জাতীয় পার্টি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, সর্বস্তরের ব্যবসায়ী, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, আপামর জনতা অংশ নেন। 

গায়েবানা জানাজার পূর্বে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়া আপসহীন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনীর ওপর সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা বিএনপির সহ সভাপতি এ্যাড. এস এম ওবায়দুর রহমান, সৈয়দপুর উপজেলা জামায়াতে ইসলামী আমির ও সংসদ সদস্য প্রার্থী হাফেজ মাওলানা আব্দুল মুনতাকিম, পৌর বিএনপির সাধারন সম্পাদক শেখ বাবলু, বিএনপি নেতা সহকারী অধ্যাপক শওকত হায়াত শাহ প্রমুখ।

জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ বলেন, বেগম খালেদা জিয়া চিরবিদায় নিলেও তিনি বাংলার কোটি কোটি  মানুষের মাঝে বেঁচে থাকবেন। দেশের রাজনীতিতে ঐক্যের ধারা তৈরি করা বেগম খালেদা জিয়া সাধারণ জনগনের মাঝে হয়ে ওঠেন জনপ্রিয় নেত্রী হিসেবে। তারা বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে শত অত্যাচার সত্বেও দেশের বাইরে নিয়ে যেতে পারেনি। কারণ তিনি বলেছিলেন, বিদেশের মাটিতে আমার কেউ নেই, আমি দেশ ছেড়ে কোথাও যাবোনা, বাংলাদেশই আমার শেষ ঠিকানা। আপসহীন দেশনেত্রী মাদার অব ডেমোক্রেসি বেগম খালেদা জিয়া ইতিহাস হয়ে থাকবেন। পরে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার হাজার হাজার মানুষের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় গায়েবানা জানাজা। জানাজার নামাজে ইমামতি করেন ওলামা দল নেতা হাফেজ মাওলানা সাইদুল ইসলাম। 

এদিকে বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে তাঁর প্রতি সম্মান দেখিয়ে গায়েবানা জানাজায় অংশ নিতে সৈয়দপুরে বেলা ২ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়। 

দেশের গনতন্ত্রের জন্য লড়াই সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়া আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বিভিন্ন রাজনৈতিক, ব্যবসায়ী ও সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন গোটা উপজেলায় ব্যানার ও ফেস্টুন লাগান। দিয়েছেন শোকবার্তা। দলীয় উদ্যোগ ছাড়াও ব্যক্তিগতভাবে আয়োজন করে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের।