Image

প্রাত্যহিক জীবনাচরণে কোরান-সুন্নাহ’র অনুসরণ

মুসলমানের পরিচয় তার কর্মে। কর্মে যথাযথভাবে ইসলামকে অনুসরণ করতে না পারলে নিজেকে খাঁটি মুসলমান হিসেবে পরিচয় দেয়ার সুযোগ নেই। সেজন্য কোরান সুন্নাহভিত্তিক জীবন গঠন করার মাঝেই রয়েছে চরম সার্থকতা। পবিত্র কোরান ও সুন্নাহ আমাদের মাঝে বিদ্যমান। তাই তা মেনে চলার সুযোগ আমাদের রয়েছে। বর্তমানে বিভিন্ন মাধ্যমে আমরা কোরান-হাদিসের শিক্ষা সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে পারছি। কোরান সুন্নাহ’র সঠিক অনুসরণের মাধ্যমে একজন মুসলিম তার জীবনকে সুন্দর করে গড়ে তুলতে পারেন। নিজেকে পরিশুদ্ধ করতে পারেন। হালাল, হারাম জেনে সেভাবে জীবনকে গঠন করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

ইসলাম শুধু একটি ধর্মের নাম নয়। এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। যেখানে জীবন গঠনের সবচেয়ে সুন্দর পন্থা রয়েছে।

ইসলামের মৌলিক সব বিষয় সম্পর্কে কোরান ও হাদিসে বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে। কীভাবে জীবন গঠন করলে ইহ ও পরকালে মুক্তি মিলবে তার বিধানও দেয়া আছে। একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন পেতে কোরান ও সুন্নাহ অনুসরণের কোনো বিকল্প নেই। নামাজ, রোজা, হজ, যাকাতের মতো ইসলামের মৌলিক বিষয়ের পাশাপাশি প্রাত্যহিক জীবনাচারণেও কোরান, সুন্নাহ’র অনুসরণ ও অনুকরণ করে পূর্ণাঙ্গ মুসলিম হওয়ার চেষ্টা করা উচিত। কেননা ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলো অনেক মুসলিম যথাযথভাবে অনুসরণ করার চেষ্টা করলেও অন্য বিষয়গুলো পালনে তেমন সচেষ্ট থাকেন না। যা একজন খাঁটি মুসলিম হিসেবে গড়ে উঠার অন্তরায়।

হালাল-হারাম জানা, চলাফেরা, আচার-আচরণে ইসলামের বিধান জানা, পর্দার বিধান সম্পর্কে জানা এবং ব্যবসা, চাকরি, শিক্ষা, অর্থনীতি, সমাজনীতিসহ জীবনের সব দিক ও বিভাগে কোরান-সুন্নাহকে একমাত্র পাথেয় হিসেবে গ্রহণ করতে পারলে পরিপূর্ণ মুসলিম হওয়া যাবে।

বর্তমান সময়টা আধুনিক প্রযুক্তির। এ সময়টা খুবই সেনসেটিভ। কারণ, আধুনিক যুগের এই প্রযুক্তিগুলো আমাদেরকে বিপথগামী করতে পারে খুব সহজেই। তাই এসব প্রযুক্তির যেন অপব্যবহার হতে না পারে সে ব্যাপারে আমাদের সজাগ থাকতে থাকতে হবে। নিজের পরিবার ও সমাজকে রক্ষা করতে হবে। কোরান ও হাদিসে বর্ণিত বিধিবিধানগুলো জেনে তা মেনে চলতে পারলে আধুনিক প্রযুক্তির ফেতনা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব।

পরিচ্ছন্ন ও সুশৃঙ্খল জীবনের জন্য কোরান-সুন্নাহ’র জ্ঞান অর্জন জরুরি। এ বিষয়ে আমরা অনেকেই গাফেল। গুরুত্ব দেইনা ইসলামী জ্ঞান আহরণের প্রয়োজনীয়তাকে। অথচ মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কোরান নাজিলের শুরুতেই ‘ইকরা’ শব্দের উল্লেখ করে মূলত: জ্ঞান অর্জনকেই গুরুত্ব দিয়েছেন। কারণ জ্ঞানার্জনের মাধ্যমেই আমরা ইসলামী বিধান সম্পর্কে জানতে পারব। ফলে তা অনুসরণ করে একটি সুন্দর জীবন গঠন করতে সক্ষম হব। কোরান-সুন্নাহ প্রাত্যহিক জীবনের প্রতিটি কর্মে প্রতিফলিত না হলে নিজেকে প্রকৃত মুসলমান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা কখনোই সম্ভব হবে না। আল্লাহ যেন আমাদের কোরান-সুন্নাহ মতে জীবন গঠনের তাওফিক দেন সেই কামনাই করছি।

লেখক - কাজী আবু মোহাম্মদ খালেদ নিজাম : শিক্ষক ও প্রাবন্ধিক।