Image

শ্রীমঙ্গল জিলাদপুরের তিন গম্বুজ গায়েবি মসজিদ!

হজরত শাহজালাল (রহ.) ও হজরত শাহপরান (রহ.) পুণ্যস্মৃতি বিজরিত সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার ৬নং আশিদ্রোন ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের জিলাদপুর গ্রাম। এ গ্রামে অবস্থিত হাজার বছরের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী তিন গম্বুজ বিশিষ্ট গায়েবি মসজিদ। এলাকাবাসীর দাবি ১০০০ খ্রিস্টাব্দে আশিদ্রোন ইউনিয়নের পশ্চিম আশিদ্রোন জিলাদপুর গ্রামে বিলাস নদীর তীরে বিশাল জায়গাজুড়ে এলাকাবাসী একটি মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। যথারীতি মসজিদের জন্য জমি নির্ধারণ করত মসজিদটির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ পরিমাপ করা হয়। যেদিন মাপ-যোগ করে ঈশান দেয়া হয় সেদিন আর কোন কাজ করা হয়নি।

পরদিন সকালে শ্রমিকরা কাজে এসে দেখেন মাপ অনুযায়ী অনিন্দ সুন্দর চুন-সুরকির একটি মসজিদ গায়েবীভাবে এক রাতের মধ্যে নির্মাণ করা হয়েছে। সে সময় থেকেই স্থানীয় লোকজনের ধারণা রাতের মধ্যে জিনেরা এ মসজিদ তৈরি করে দিয়েছেন। এরপর থেকে আজ পর্যন্ত জিলাদপুর তিন গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটি গায়েবি মসজিদ নামে পুরো এলাকায় পরিচিত। মসজিদটিতে গিয়ে দেখা যায়, পুরো মসজিদটির কাটামোতে কোন ধরনের রড বা ইট-সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়নি। মসজিদটি নির্মাণে ব্যবহৃত হয়েছে চুন-সুরকি। মুঘল স্থাপত্য রীতিতে তৈরিকৃত এ মসজিদটিতে রয়েছে তিনটি গম্বুজ। প্রায় তিন একর জমি নিয়ে বেষ্টিত এ মসজিদটিতে একসঙ্গে দেড় শতাধিক মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন।

প্রাচীন এ মসজিদটিতে দফায়-দফায় সংস্কার কাজ করা হয়েছে। নির্মাণকালে মসজিদটিতে কোনো বারান্দা ছিল না। এলাকাবাসী মসজিদটিতে বারান্দা নির্মাণ করেছেন। মসজিদটির দেয়ালে দেয়া হয়েছে রঙের প্রলেপ। সংস্কার করা হয়েছে মসজিদটির শৌচাগার ও অজুখানা। শ্রীমঙ্গল উপজেলার ৬নং আশিদ্রোন ইউনিয়নের জিলাদপুর গ্রামে অবস্থিত ঐতিহাসিক ও প্রাচীন তিন গম্বুজ বিশিষ্ট গায়েবি মসজিদটি দেখতে প্রায় প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শত-শত মানুষ আসেন। এখানে নামাজের ওয়াক্তে এটি দেখতে আসা মানুষ নামাজ আদায় করেন। শুধুমাত্র মুসলিম ধর্মাবলম্বীরাই নয়, এটি দেখতে আসেন অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা।

লেখক - ইসমাইল মাহমুদ : গণমাধ্যম কর্মী ও কলামিস্ট।