Image

আমবয়ানের মধ্য দিয়ে বিশ্ব ইজতেমা শুরু শুক্রবার

শামসুল হক ভূঁইয়া, গাজীপুর: টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের সকল প্রকার কাজ বুধবারের মধ্যেই শেষ হবে বলে জানিয়েছেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। আগামী বৃহস্পতিবার থেকেই তাবলিগ জামাতের মুসল্লিরা অবস্থান নিতে পারবেন প্যান্ডেলের ভেতরে। আগামী শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) থেকে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে তাবলীগ জামাতের তিনদিনব্যাপী বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব।

১২ জানুয়ারি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে প্রথম পর্বের সমাপ্তি ঘটবে। চারদিন বিরতি দিয়ে ১৭ জানুয়ারি শুরু হয়ে ২য় পর্বের তিনদিনের বিশ্ব ইজতেমা ১৯ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে ৫৫তম বিশ্ব ইজতেমার সমাপ্তি ঘটবে।

এ লক্ষ্যে রোদ, বৃষ্টি ও শীত উপেক্ষা করে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা প্যান্ডেলের কাজ এগিয়ে নিচ্ছে। ছুটির দিনে ঢাকা ও আশ পাশের মসজিদ মাদরাসা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও কাজ করেছেন।

মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ইজতেমা ময়দানে ২০টি প্রবেশ গেট আছে। এসব গেটে আর্চওয়ে থাকবে। পুলিশ ও র‌্যাবের জন্য ২৫টি ওয়াচ টাওয়ারও থাকবে। ৪ শতাধিক সিসি ক্যামেরা থাকবে। পাশাপাশি তাৎক্ষণিক বিচার, নিরাপত্তা, বিশুদ্ধ খাবার এবং আনুসাঙ্গিক বিষয় সুষ্ঠুভাবে সমাধানের জন্য একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ৩০টির অধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করবে। যাতে সুষ্ঠুভাবে ইজতেমা সম্পন্ন করা যায়। এছাড়া সার্বিক মনিটরিং এর জন্য ৮টি কন্ট্রোল রুম রয়েছে পুলিশ, র‌্যাব, আনসার ভিডিপি, জেলা প্রশাসন ও সিটি কর্পোরেশনের।

পরিসেবার মধ্যে রয়েছে পয়ঃনিষ্কাশন ও পানির ব্যবস্থা। ওজু-গোসলের ব্যবস্থাসহ এখানে তিনতলা বিশিষ্ট ৩১টি পাকা ভবনে ৮ হাজারের মতো ইউনিট টয়লটের ব্যবস্থা রয়েছে। আরো ১ হাজার মোবাইল টয়লেট করা হচ্ছে। মুসল্লিদের আসার জন্য ৪০০ বিআরটিসি বাস, বিশেষ ট্রেনসহ লঞ্চ নৌ-বোর্ড থাকবে। মাঠের উত্তর পাশে র‌্যাব, পুলিশ জেলা প্রশাসন ও সিটি কর্পোরেশনের পৃথক কন্ট্রল রুম স্থাপন করা হয়েছে।

এখানে কোনো দ্বিধাদ্বন্ধ নেই। সকলেই আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাজ করছে। সবাই মিলে সৌহার্দ্যমূলক পরিবেশে মিটিং হয়েছে। ইতোমধ্যে ময়দানের বিশাল এলাকা জুড়ে সামিয়ানা টানানো সম্পন্ন হয়েছে। বাকি অংশে সামিয়ানা টানানোর কাজ রোদ বৃষ্টি ও শীত উপেক্ষা করে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে আজও প্যান্ডেলের কাজ করছেন।

তিনি আরো বলেন, ‘আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য প্রতিবছর দেশি বিদেশি মুসল্লিরা এখানে আসেন। এবার আরো বেশি মুসল্লি আসবেন। প্রতি বছর আমরা সাধারণত ১০০টির মতো দেশের প্রতিনিধি পাই। তাতে ১০-১৫ হাজার মুসল্লি আসেন। এর জন্য ভিসা পদ্ধতি সহজ এবং দ্রুততম করা হয়েছে। আশা করি সব মিলিয়ে একটি সুন্দর ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। আল্লাহর সন্তুষ্টি বিধানে আমরা কাজ করতে পারবো।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মুসল্লিদের তুরাগ নদী পারাপারের সুবিধার্তে ৭টি ভাসমান সেতু নির্মাণ কাজ শেষ করছেন। এতে দুইপারের মুসল্লিরা অনায়াসে দুইপারে যাতায়াত করতে পারবেন।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আনোয়ার হোসেন বলেন, পুরো ইজতেমা ময়দান নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হবে। ৮ হাজারের উপরে পুলিশ, র‌্যাব সদস্য, আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা কাজ করবে। এছাড়া ফায়ার সার্ভিসের তিন শতাধিক সদস্য কাজ করবে।

এদিকে, গত বৃহস্পতিবার বিকালে বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক পরিস্থিতি ও আইনশৃংখলা বিষয়কসভা ইজতেমা মাঠের ১ নম্বর প্রবেশপথ বাটা সু কোম্পানি ও আশরাফ সেতু সংলগ্ন সড়কে অনুষ্ঠিত হয়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সভাপতিত্বে বক্তব্য দিবেন ধর্ম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ এমপি, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপি, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, সিনিয়র স্বরাষ্ট্র সচিব কামাল উদ্দিন, জিএমপি কমিশনার আরোয়ার হোসেন, গাজীপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার পিপিএম বার, ইজতেমা আয়োজক উভয় গ্রুপের মুরুব্বীগণ ও সংশ্লিষ্ট দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ। এ সভায় এবারের ইজতেমার সার্বিক পরিস্থিতি ও আইনশৃংখলা পর্যালোচনা করা হয়।

মানবকণ্ঠ/আরবি