Image

আমি তার লেখা পেলেই পড়ি

আমি ফারুক হোসেনের লেখা পড়ি দীর্ঘদিন ধরে। তিনি ছোটদের জন্য চমৎকার সব গল্প, প্রবন্ধ, ছড়া লিখে থাকেন। তার সঙ্গে আমার পরিচয় দীর্ঘদিনের। আমার মনে আছে, আটাত্তর সালের দিকে, যখন রোববার পত্রিকাতে কাজ করতে গেলাম, সেই সময় ফারুকের সঙ্গে আমার খুবই ঘনিষ্ঠতা হয়। সে নিয়মিত আমাদের অফিসে আসত এবং আমরা আড্ডা দিতাম। লেখালেখি নিয়ে কথা বলতাম। গল্প করতাম। কিশোর বাংলা নামের একটি পত্রিকায় ফারুকের অনেক লেখা আমি পড়েছি। তাছাড়া আমাদের দৈনিক পত্রিকাগুলোতে ছোটদের জন্য যে পাতাগুলো প্রকাশিত হয়, সেসব পাতায় ফারুকের ছড়া, গল্প, কবিতা আমি পড়েছি।

শুধু ছোটদের জন্য ফারুক দীর্ঘদিন ধরে লেখালেখি করছে এবং তার পাঠকও তৈরি হয়েছে। ছোটদের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা তৈরি হয়েছে। আমি তার লেখা পেলেই পড়ি। তার লেখা পড়ে আমার যেটা মনে হয়েছে যে, ছোটদের জগৎটাকে ফারুক ভালোভাবেই ধরবার এবং বুঝবার চেষ্টা করেছে। ছোটদের জগৎ নিয়ে যারা লেখালেখি করেন, তাদেরকে একটু সাবধানে লেখালেখি করতে হয়। বড়দের লেখালেখিতে অনেক কিছুই খুব চট করে বলে ফেলা যায়। চট করে লিখে ফেলা যায়। কিন্তু ছোটদের জন্য বা কিশোরদের জন্য লেখার সময় একজন লেখককে সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। সেখানে ভাষার প্রতি নজর রাখতে হয়। বক্তব্য, কাহিনীবিন্যাসের প্রতি নজর রাখতে হয়। চরিত্রচিত্রণের প্রতি নজর রাখতে হয়। আমি দেখেছি, ফারুক অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে এ ব্যাপারগুলো মান্য করেছে তার লেখায়। ফলে সে তার লেখার জগৎকে অনেকখানি সমৃদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছে।
ছোটদের জন্য একনাগাড়ে দীর্ঘদিন ধরে লিখে সে শিশুকিশোর পাঠকদের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। দেশে যারা সাহিত্যপ্রেমী, বিশেষ করে ছোটদের সাহিত্যের যারা অনুরাগী, ফারুক তাদের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। ফারুক হোসেনের সমগ্র অর্জন আমার খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয়।

আর একটি কথা, আমাদের এখানে সাধারণত যেটা হয়, একটা সময় আমরা লেখালেখি শুরু করি গভীর আবেগ ও আগ্রহ নিয়ে। তারপর ক্রমাগত লেখার পরিমাণ কমে আসে। এক সময় সরে যেতে চেষ্টা করি লেখালেখি থেকে। কিন্তু ফারুকের মধ্যে এ ব্যাপারটি আমি কখনও লক্ষ করিনি। বরং সে নিয়মিত লিখেছে। নিয়মিত তার লেখা কাগজে ছাপা হচ্ছে। বই বেরুচ্ছে। ফেব্রুয়ারির বইমেলায় তার সঙ্গে দেখা হয়। তার বই নিয়ে কথা হয়। সব মিলিয়ে ফারুক আমার নিজস্ব জগৎটাকে অনেকখানি আলোকিত করেছে।

 

ফারুক হোসেনের গুচ্ছছড়া

উক্তিতে বঙ্গবন্ধু

(১)
বলেলেন তিনি হেনরি কিসিঞ্জার,
আগামীদিনে যে আসবে না কভু আর,
এমন তীব্র তেজি ও স্বাধীনচেতা,
এমন বজ্র কঠিন সাহসী নেতা,
আর কোন দেশে মহাদেশে এশিয়ায়,
এ কথা এখন চিন্তা ও চেতনায়।

(২)
ফিদেল ক্যাস্ট্রো বললেন,
আমি দেখিনি তো হিমালয়।
দেখেছি একটি দেশ,
সেই দেশটির জয়।
সঙ্গে দেখেছি এক
বঙ্গবন্ধু, তার হাতে এই
দেশটির অভিষেক।

(৩)
ইয়াসির আরাফাত ঠিক
বুঝেছেন মুজিবের
সেরা দুই দিক।
একদিকে সংগ্রামী
তিনি প্রতিদিন,
আর আপসহীন
আবার অন্যদিকে
মনটা তরল,
কুসুম কোমল।

(৪)
বিশ্বাস করা যায় না এমন
বাঙালিকে কোনোভাবে,
মুজিবকে তারা হত্যা করেছে
এমন নেতা কি পাবে?
মুজিবকে মেরেছে যারা,
যে কোন ঘৃণ্য জঘন্য কাজ
করতে পারবে তারা।
নোবেল বিজয়ী উইলী ব্রান্ট
এ রকমই তার উক্তি,
বাঙালি কতটা নিচে নেমেছিল
তিনি দিয়েছেন যুক্তি।

(৫)
‘নিউজউইক’ করেছে
মুজিবের নাম স্থির,
‘পোয়েট অফ পলিটিক্স’
এই পৃথিবীর।

(৬)
কেনেথ কাউন্ড্রার
উক্তি ভীষণ শাণিত,
তার মতে নেতা বঙ্গবন্ধু,
ভিয়েতনামের জনগণকেও
করেছে অনুপ্রাণিত

মানবকণ্ঠ/এইচকে