Image

গোয়েন্দা গুবলুর কথা বলছি...

তোমাদের সকলের প্রিয় ‘গোয়েন্দা গুবলু’ এগারো-বারো বছরের এক কিশোর ছেলে। তার মাথাভর্তি ঝাঁকড়া চুল, টিকালো নাক, বুদ্ধিদীপ্ত চোখ আর সাধারণ পোশাকেই সবার নজর কাড়ে সে। গুবলু দুষ্টু বটে, তবে বদমাশ নয়।

বলছিলাম জনপ্রিয় গোয়েন্দা লেখক অরুণ কুমার বিশ্বাসের গুবলু গোয়েন্দা সিরিজের গুবলুর কথা। কুসুমপুর নামক এক অজপাড়াগাঁয়ে তার বাস। গুবলু দেখতে মোটেও মোটা নয় বরং চলনসই। সে জানে যে গোয়েন্দাগিরি করতে গেলে যেমন মাথা খাটাতে হয়, তেমনি আবার অপরাধীর পেছনে ছুটতেও হয়। পিপে বা ঢোলের মতন মোটা হলে সে ছুটবে কী করে!

বন্ধু সুমন, যে কিনা ‘লম্বু সুমন’ নামেই বেশি পরিচিত, সে তার প্রিয় সহচর। বাপ্পি নামে আছে আরেকজন, গুবলু তাকে মজা করে ডাকে কুনোব্যাঙ। কারণ কাজের সময় প্রায়ই তাকে খুঁজে পাওয়া যায় না। বাপ্পি অকারণ গুলতাপ্পি মারে, তবে তাতে দোষের কিছু নেই। ওরা খুব ভালো বন্ধু। গুবলু যুক্তির আলোয় পথ দেখে, কেসের গিঁট খুলতে ক্লান্তি নেই তার। গুবলু চরিত্রটি মূলত লেখকের আরো আগেকার কিশোর চরিত্র ‘কানুদা’র আদলে তৈরি। এদের মাঝে লেখক নিজেকেই খুঁজে ফিরছেন। তার সেই হারানো সময়, দুরন্ত দুর্বার শৈশব।

গুবলু কথা কম বলে, মগজ ঘামায় বেশি। সারাক্ষণ তার মাথায় নাকি রহস্য খেলা করে। নতুন নতুন রহস্যের খোঁজ না পেলে গুবলুর ভীষণ মন খারাপ হয়। ক্ষুধা-তৃষ্ণা চলে যায়, একদম ঘুম পায় না। ক্লাসে সে ফার্স্টবয় নয়, আবার ব্যাকবেঞ্চার যাকে বলে, তাও নয়। সে মাঝারি মানের ছাত্র, বিপদ দেখলে অপরের উপকারে এগিয়ে আসে। বন্ধুরা তাই গুবলু বলতে অজ্ঞান। ওর বাবা নেই, মা-ই তাকে কোলেপিঠে করে আগলে রেখেছেন। মেঠোপথ, সবুজাভ ঝোপ-জঙ্গল, বিড়াল-কুকুর বৃষ্টি, শীতের শিশির খুব ভালো লাগে গুবলুর।

গুবলুর মামাতো ভাই টুবলু, তাকে নিয়েও কিছু কেস সে সল্ভ করেছে। কী করে সে গোয়েন্দাগিরি করে! না না, শার্লক হোমসের মতো মাথায় চওড়া রিমঅলা টুপি তার নেই, তবে মগজে ঘিলু আছে, বুকে বল আছে, আর আছে একখানা ‘বড়-দেখা’ কাচ, মানে ম্যাগনিফাইং গ্লাস। ওর নাকখানা বেশ সরেস, অর্থাৎ কিছু একটা অপরাধ ঘটলে স্রেফ গন্ধ শুঁকেই সে অপরাধীর টিকির খোঁজ পায়। আর জবরদস্তি কেস পেলে সে সদলবলে বসে যায় নগেনের দোকানে, দশ টাকার গরমাগরম জিলিপি কিনে খায়। জিলিপি খেলে নাকি কেসের আড়াই প্যাঁচ আপসে খুলে যায়। গুবলুর হাতে চোর-ছেঁচড় বমাল ধরা পড়ে।

গোয়েন্দা গুবলু সিরিজ আকারে বেরোচ্ছে পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স থেকে। শুরুটা ছিল অন্যপ্রকাশে। ‘গুবলুর গোয়েন্দাগিরি’। তারপর ‘গুবলু গোয়েন্দার পায়েল রহস্য’। এবার বেরোচ্ছে ‘গুবলু গোয়েন্দা বিপদে’। পরবর্তী বইমেলায় আসছে ‘গুবলু গোয়েন্দার গণেশরহস্য’। এভাবেই চলবে, চলতেই থাকবে আমাদের প্রিয় গুবলুর চৌকস গোয়েন্দাগিরি।

মানবকণ্ঠ/জেএস