Image

সৈয়দপুরে পাশের হারে চমক দেখালো আদর্শ বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ

মিজানুর রহমান মিলন, সৈয়দপুর থেকে : গত বছরের মতো এবারও সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে সৈয়দপুর আদর্শ বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ। গত ১৬ অক্টোবর ঘোষিত এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে নারী শিক্ষায় পাসের হারে সেরাসহ উপজেলায় চতুর্থ হয়ে অত্যন্ত চমৎকার সাফল্য দেখিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। একই সাথে সৈয়দপুরের ৩ টি মহিলা কলেজের মধ্যে জিপিএ -৫ প্রাপ্তিতে দ্বিতীয় এবং গতবারের চাইতে দুই ধাপ এগিয়ে উপজেলায় সপ্তম হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এবারের ঘোষিত ফলাফল বিশ্লেষণে সাফল্যের এমন চিত্র উঠে এসেছে। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান হাবিব জানান, আমরা আশাবাদী ছিলাম আমাদের প্রতিষ্ঠান শতভাগ সাফল্য অর্জন করবে। কিম্তু দুই জন পরীক্ষার্থী এক বিষয়ে অকৃতকার্য হওয়ায় সেই সফলতা আসেনি।  গত ১৬ অক্টোবর প্রকাশিত পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, এবার সৈয়দপুর উপজেলার

 

১৪ টি কলেজের মধ্যে মাত্র একটি কলেজ শতভাগ পাসের সাফল্য পেয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি হলো সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ। এ সাফল্য থেকে এবার ছিটকে পড়েছে শহরের কয়েকটি বনেদী প্রতিষ্ঠান। তবে শতভাগের কাছাকাছিতে রয়েছে ক্যান্টনমেন্ট পাললিক স্কুল এন্ড কলেজ (৯৯.৩৯℅), লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজ (৯৮.৬৬℅), আদর্শ বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ (৯৮.১১%), সৈয়দপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ (৯৩.৩০%), সানফ্লাওয়ার স্কুল ও কলেজ (৯২.৪২%), সৈয়দপুর সরকারি কলেজ (৯১.২৬%)। 

ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, শতভাগ পাসের হারে আদর্শ বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ সৈয়দপুর  উপজেলায় চতুর্থ হলেও নারী শিক্ষায় সেরা হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে উপজেলায় সপ্তম অবস্থানে থাকা নারী শিক্ষায় দ্বিতীয় হয়েছে এ প্রতিষ্ঠানটি। এ প্রতিষ্ঠান থেকে এবার ১০৬ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে ১০৪ জন। এদের মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ১৯ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষায় ১৬ জন পরীক্ষা দেয়। ওই দুই বিভাগে পাসের হার শতভাগ। তবে মানবিকে ৭১ জন পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ৬৯ জন। তিন বিভাগে জিপিএ -৫ পেয়েছে চার জন। এদের মধ্যে বিজ্ঞানে দুই, মানবিকে এক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে এক জন  জিপিএ-৫ পায়। 

উপজেলায় পাস ও জিপিএ -৫ প্রাপ্তির হারে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে সৈয়দপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ। এ প্রতিষ্ঠানের মোট পরীক্ষার্থী ২৫৪ জনের মধ্যে পাস করেছে ২৩৭ জন। পাসের হার শতকরা ৯৩.৩০ ভাগ। জিপিএ - ৫ পেয়েছে ১৭ জন। এদের মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ১১ ও মানবিকে ছয় জন জিপিএ -৫ পায়। তবে পাসের দিক থেকে নারী শিক্ষায় প্রতিষ্ঠানটির অবস্থান দ্বিতীয়। অপর দিকে পাসের দিক থেকে উপজেলায় অষ্টম এবং নারী শিক্ষায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে পাইলট বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ। এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে এবারে ১৫৮ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে পাস করেছে ১১২ জন। পাসের হার শতকরা ৭০.৮৮ ভাগ। এ প্রতিষ্ঠানের কোন শিক্ষার্থীর ভাগ্যে জোটেনি জিপিএ -৫ এর সাফল্য।  

আদর্শ বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ পাসের দিক থেকে উপজেলায় চতুর্থ, জিপিএ -৫ প্রাপ্তিতে সপ্তম  এবং নারী শিক্ষায় সেরা সাফল্য প্রসঙ্গে অধ্যক্ষ মো. হাবিবুর রহমান বলেন প্রতিষ্ঠানটির চমৎকার সাফল্যে আমরা আনন্দিত। তিনি বলেন, আগামিতে যাতে শতভাগ সাফল্যসহ জিপিএ -৫ প্রাপ্তির সংখ্যা বৃদ্ধি পায় সে ব্যাপারে এখন থেকে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সবধরনের প্রস্তুতি নেয়া হবে। এবারে সাফল্যের পিছনে প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষকদের অবদান সবচেয়ে বেশি জানিয়ে তিনি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। অধ্যক্ষ হাবিবুর বলেন, প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি প্রবীণ শিক্ষাবিদ আলহাজ্ব অধ্যক্ষ আব্দুল গফুর সরকার স্যারের দিক নির্দেশনায় শিক্ষকরা পরীক্ষার্থীদের পড়াশোনায় মনোযোগী করতে ছিলেন আন্তরিক। তারা অভিভাবকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখাসহ পরীক্ষার্থীদের প্রতিটি বিষয়ের পড়া বুঝিয়েছেন। তিনি বলেন পরীক্ষার বিষয়টিকে মাথায় রেখে পরীক্ষার্থীদের পড়াশোনায় মনোযোগী করতে শিক্ষকরা অভিভাবকদের বিশেষ পরামর্শ দেন। ফলে শিক্ষকদের পরিশ্রম ও অভিভাবকদের সচেতনতায় প্রতিষ্ঠানটির সাফল্য আসে। আগামিতে যাতে আরও ভাল ফলাফল অর্জন হয় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।