Image

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় মেরামত হওয়া ৮৩টি কোচ রেলের ট্রাফিক বিভাগে হস্তান্তর

মিজানুর রহমান মিলন, সৈয়দপুর থেকে : নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে অতিরিক্ত যাত্রীসেবায় মেরামত করা ১১০ টি কোচের মধ্যে ইতিমধ্যে ৮৩ টি কোচ রেলওয়ে ট্রাফিক বিভাগে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি ২৭ টি কোচ রং ও অন্যান্য কাজ শেষে ৩০ মার্চের মধ্যে হস্তান্তর করা হবে।  বর্তমানে কারখানা শ্রমিক কর্মচারিরা কোচগুলোর বাকি কাজ সম্পন্ন করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্বাবধায়ক (ডিএস) মো. সাদেকুর রহমানের দিক নির্দেশনায় চলছে রেল কোচ মেরামতের কর্মযজ্ঞ। 

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার উর্ধ্বতন উপ সহকারি প্রকৌশলী (এসএসএই) ইনচার্জ কার্যালয় সুত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। 
 
সূত্র জানায়, প্রয়োজনের তুলনায় জনবল সঙ্কটের মধ্যেও রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্বাবধায়কের দিক নির্দেশনা ও সার্বক্ষণিক তদারকির মাধ্যমে কারখানার শ্রমিক কর্মচারিরা বেশ কিছুদিন আগে ১১০টি রেল কোচ মেরামতের কাজ শুরু করে। এসবের মধ্যে রয়েছে ৮০টি ব্রডগেজ ও ৩০টি মিটারগেজ লাইনের কোচ। আর এসব হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনে সুবিধার জন্য। সুত্রটি বলছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ট্রাফিক বিভাগে হস্তান্তর করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিক কর্মচারিরা। 
উপলক্ষ যাত্রী পরিবহনে কোচগুলো ঈদের স্পেশাল ট্রেনগুলোতে যুক্ত করা। ফলে বাড়তি কোচগুলো রেলবহরে যুক্ত হলে ঈদে যাত্রীদের যাত্রাপথের ভোগান্তি কিছুটা হলেও লাঘব হবে। এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় ২৯টি শপে রেল কোচ মেরামতের কাজ চলছে দ্রতগতিতে। জনবল সঙ্কটের মধ্যেও এখানকার শ্রমিক কর্মচারিরা প্রতিদিন একটি কোচ ও একটি ওয়াগন মেরামত করছে। এছাড়া নানা ধরনের যন্ত্রাংশ তৈরি করা হয় এ কারখানায়। নির্ধারিত সময়ে যাতে কোচগুলো রেলবহরে যুক্ত করা যায় সেজন্য শ্রমিকদের জন্য ওভার টাইমের মজুরি দেওয়া হচ্ছে। ফলে অন্যান্যবারের চাইতে এবার কারখানায় রেল কোচ মেরামতে  কর্মকর্তা-কর্মচারিদের আন্তরিকতায় কাজ চলছে বিরামহীন।  মূলত তাদের কারণে এখন পর্যন্ত (২৪ মার্চ) মিটার ও ব্রডগেজ মিলিয়ে ১১০টির মধ্যে ৮৩ টি কোচ পাকশি ও লালমনিরহাট রেলওয়ের ট্রাফিক বিভাগে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে কথা হয় সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার উর্ধ্বতন উপ সহকারি প্রকৌশলী (ইনচার্জ)  মো. রুহুল আমিনের সাথে। তিনি বলেন,২৪ মার্চ পর্যন্ত লালমনিরহাট ও পাকশি রেলওয়ে ট্রাফিক বিভাগে মেরামত হওয়া ৮৩ টি কোচ হস্তান্তর করা হয়েছে। এসবের মধ্যে ৬৫ টি ব্রডগেজ ও ১৮ টি মিটার গেজের কোচ। আগামি ৩০ মার্চের মধ্যে বাকি ২৭ টি কোচ হস্তান্তর করা হবে। এজন্য চলছে শেষ মুহুর্তের কাজ। রবিবার (২৪ মার্চ) রেলওয়ে কারখানায় গিয়ে দেখা যায় শ্রমিক কর্মচারিদের কর্মব্যস্ততার দৃশ্য। কারখানার ২৯টি শপে চলছে এসব কাজ। সেখানে দেখা যায় কোচগুলোর দরজা,জানালা,আসন মেরামত,
ওয়েল্ডিং ও রংতুলির সাহায্যে বডিতে রংকরণের কাজ। প্রতিদিন সকাল ৭ টা থেকে বিকেল পর্যন্ত চলছে এ কর্মযজ্ঞ। ক্যারেজ শপের ওয়েল্ডিং মিস্ত্রি সুবাহান আলী জানান, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে 
লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে কোচের যাবতীয় কাজ করা হচ্ছে। আমাদের ডিএস স্যারের নির্দেশনায় আমরা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছি। যাতে মানুষজন আনন্দে পরিবারদের সঙ্গে ঈদ করতে পারে। পেইন্ট শপের শ্রমিক আউয়াল বলেন,আমাদের শপের কাজ হচ্ছে কোচগুলো রং করে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা।লোকবল সংকট থাকায় খুব কষ্টের মধ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কারণ রেল যেহেতু সেবামূলক প্রতিষ্ঠান তাই আমরা সেবার জন্য সবসময় বেশি করে শ্রম দিচ্ছি। রেলওয়ে কারখানার অন্যান্য শ্রমিকরা জানান, ঈদ আসলে আমাদের কাজের ব্যস্ততা বাড়ে।দম নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। মেরামত হওয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত কাজের চাপ থাকবে। রেল কোচ মেরামতের সার্বিক বিষয়ে কথা হয় সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক(ডিএস) সাদেকুর রহমানের সঙ্গে তিনি বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে অতিরিক্ত রেল কোচ মেরামতে আন্তরিকতার সাথে ব্যস্ত সময় পার করছেন রেলওয়ে কারখানার শ্রমিক কর্মচারিরা। এসব কাজের দেখভাল করছেন কারখানার কর্মকর্তারা। তাদের কাজের গতি খুবই ভালো। তিনি বলেন নির্ধারিত সময়েই মেরামত হওয়া রেল কোচ রেলওয়ের ট্রাফিক বিভাগে হস্তান্তর করা হবে।