Image

সুনামগঞ্জেৱ দুলভারচরে বহু বছরের দখলবাজি, চাঁদাবাজির অভিযোগ

ৱেজা টুনু, সুনামগঞ্জ: বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের দুলভারচর বাজারে ভূমি জবর দখল, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় একদল প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ কর্মীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

 

অভিযোগে জানা গেছে, দুলভারচর মৌজার জে.এল. নং–৫৯, খতিয়ান নং–২০৯ এর বিভিন্ন দাগের জমি দখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছে একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠী। তারা দুলভারচর পয়েন্ট এলাকায় জোরপূর্বক একটি মার্কেট নির্মাণ করে। এমনকি নির্মাণকাজের সময় একই এলাকার মৃত আব্দুল হাইয়ের ছেলে আসিফ বিল্লার বাড়ির সামনের অংশ দখলেরও চেষ্টা করা হয়।

 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই গোষ্ঠীর প্রধান হলেন মৃত ইজ্জত উল্লা চৌধুরীর ছেলে সামছুল হক চৌধুরী (বৃটিশ)। রয়েছে তার বিশাল এক কর্মী বাহিনী, যাদের সবাই তার ভাই, ভাতিজা। তারা হলেন তার ভাই নুরুল ইসলাম চৌধুরী, মৃত আব্দুর রউফ চৌধুরীর ছেলে মালেগণী, উজ্জল মিয়া, মশিউর রহমান, নিকসন মিয়া, মালেগনির ছেলে সবুজ মিয়া,সামছুল হকের ছেলে আফজাল হোসেন,মৃত আলাল চৌধুরীর ছেলে সেলিম মিয়া । তারা সবাই দুলভারচর গ্রামের বাসিন্দা এবং দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে আসছেন। নুরুল ইসলাম চৌধুরী আওয়ামীলীগ শাসনামলে নিজেকে আওয়ামীলীগের জেলা কমিটির সদস্য বলে এলাকায় প্রচার করতেন।

 

স্থানীয়দের অভিযোগ, এই চক্রটি প্রায় ১৭–১৮ বছর ধরে এলাকার ফসলি জমি, মসজিদের জায়গাসহ বিভিন্ন স্থানে দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, ভয়ভীতি প্রদর্শন, মিথ্যা মামলা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগও রয়েছে।

 

ভুক্তভোগী আসিফ বিল্লাহ বলেন, সুনামগঞ্জ-সাচনা সড়কের পাশে আমার বাবার রেকর্ডীয় ভূমি এমনকি আমার বাড়ির সামনের অংশও দখলের চেষ্টা করছে। জায়গা ছেড়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন ভয়ভীতি প্রদশর্ন এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। সমাধানের জন্য দাবি করছে ১০ লক্ষ টাকা। আমি বিষয়টি বিশ্বম্ভরপুর থানা ও সেনাবাহিনীর কাছে অভিযোগ করেছি, তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শনও করেছেন।

শুধু জমি দখলের মধ্যেই তাদের কর্মকান্ড সীমাবদ্ধ নয়। রয়েছে প্রতারণার অভিযোগও। দুলভারচর বাজারের ব্যবসায়ী শহিদ মিয়া বলেন, আমি তাদের কাছে ৩০ হাজার টাকার মতো দোকান বাকী পাই। টাকা চাইলে আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি সহ বিভিন্ন হুমকী-ধামকী প্রদান করে।

 

অভিযোগকারীদের মধ্যে আশরাফুল ইসলাম চৌধুরী, শাহজাহান, নাজির আলম, আজিজুর রহমান চৌধুরী, সাদিকুর রহমান চৌধুরী, মো. শফিক মিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ সমর্থিত এই গোষ্ঠী বহু বছর ধরে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। কেউ প্রতিবাদ করলে ফাঁসানো হয় মিথ্যা মামলায়। পরে সমাধানের অশ্বাস দিয়ে দাবি করেন মোটা অংকের চাঁদা। তাদের কাছে রয়েছে রামদা, সুলফি সহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র যেগুলোর মাধ্যমে মানুষকে প্রকাশ্যে হুমকী দেন এবং এলাকায় দাঙ্গা-হাঙ্গামার সৃষ্টি করেন। এমনকি বিগত সরকারের আমলে লাইসেন্স করা একটি বন্দুকও তাদের কাছে রয়েছে বলে স্থানীয়রা দাবি করেন। সেই বন্দুক, রামদা, সুলফি নিয়ে প্রায়সময় এলাকায় অস্ত্রের মহড়া দেন। এলাকায় তাদের ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে পারে না।

 

অভিযুক্ত মালে গণী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার রেকর্ডীয় ভূমি আমার দখলে রয়েছে। আমি কারো জমি দখল করিনি। বর্তমানে মামলা আদালতে চলমান। আদালতের রায় পেলে তবেই জায়গা নেব।