Image

ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে পণ্য রফতানিতে হয়রানি বেড়েছে

বেনাপোল কাস্টমস কর্মকর্তাদের বিভিন্ন পদক্ষেপে গত ৫ বছরের ব্যবধানে বেনাপোলে বন্দর দিয়ে ভারতে বাংলাদেশি পণ্যের রফতানি বেড়েছে দ্বিগুণ। এতে যেমন বৈদেশিক মুদ্রা আহরণ বেড়েছে তেমনি দেশে অনেক কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। বেড়েছে দেশীয় পণ্যের কদর। তবে ভারতের পেট্রাপোল কাস্টমস ও নিরাপত্তা বাহিনী বিএসএফের পণ্যবাহী ট্রাক তল্লাশি ও বিভিন্ন খাতে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ে ব্যাহত হচ্ছে রফতানি কার্যক্রম।

বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে প্রতি বছর প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা মূল্যের বাংলাদেশে উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্য ভারতে রফতানি হয়। ২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবছর পর্যন্ত ৫ বছরে রফতানি হয়েছে ১৮ লাখ ৫১ হাজার ২৫৭ মেট্রিক টন বিভিন্ন ধরনের পণ্য। রফতানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে পাট ও পাটজাতদ্রব্য, তৈরি পোশাক, মাছ, কেমিকেল, মেহেগনি ফল, টুকরা কাপড়, চালের কুড়া, ঝাটার কাটি ও প্লাস্টিক ডাস্ট উল্লেখযোগ্য।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারতীয় অংশে বাণিজ্য তদারকিতে নিয়োজিত কর্মকর্তারা আন্তরিক হলেই ভারত- বাংলাদেশ দু’দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য আরো প্রসারিত হবে। আর কাস্টম কর্তৃপক্ষ বলছেন, সমস্যা সমাধানে সন্তোষজনক সাড়া মিলেছে।

ইন্দো-বাংলা চেম্বার অফ কমার্স সাব কমিটির পরিচালক মতিয়ার রহমান বলেন, দেশে স্থলপথে যে বাণিজ্য হয় তার ৭০ শতাংশ হয়ে থাকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় প্রথম থেকে এ পথে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের বাণিজ্যে আগ্রহ বেশি। কিন্তু ব্যবসায়ীরা রফতানি বাণিজ্যে দারুণ সম্ভাবনা দেখলেও ভারত অংশে নানা হয়রানিতে ব্যাহত হচ্ছে এ বাণিজ্যিক কার্যক্রম।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, ভারতীয় পণ্যের রফতানি বাণিজ্যে ভারতীয়দের আগ্রহ বেশি থাকলেও বাংলাদেশি পণ্য আমদানিতে তাদের আগ্রহ কম। ভারত অংশে অবকাঠামো উন্নয়ন ও হয়রানি কমলে বাণিজ্য আরো গতিশীল হবে।

বেনাপোল আমদানি-রফতানিকারক সমিতির সভাপতি মহসিন মিলন বলেন, কাস্টমস কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে রফতানি বাণিজ্যে পরিবর্তন এসেছে। রফতানি বাড়ায় যেমন বৈদেশিক মুদ্রা আয় বেড়েছে তেমনি দেশে অনেক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। অবহেলিত পণ্যের কদর বেড়েছে।

রফতানি পণ্যবহনকারী বাংলাদেশি ট্রাকচালকরা বলছেন, অভিযোগ থাকলে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) সেই সকল ট্রাক তল্লাশি করবেন। কিন্তু সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া সব ট্রাক দাঁড় করিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা তল্লাশির সময়ক্ষেপণ বাণিজ্যে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। প্রতিবাদ করলে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে অহরহ। অপর দিকে বকশিষের নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে। বেশি টাকা দিতে না চাইলে অনেক সময় পণ্যে কাগজপত্র আটকে রেখে দিচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়ে আমাদের বেশি টাকা দিতে হচ্ছে।

বেনাপোল কাস্টম হাউজের সহকারী কমিশনার উত্তম চাকমা বলেন, আগে অবহেলা ছিল রফতানি বাণিজ্যে। বর্তমান কাস্টম কমিশনারের হস্তক্ষেপে রফতানিতে গতি ফিরেছে। তবে ভারত অংশে হয়রানি বন্ধে আলোচনায় তারা সন্তোষজনক সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।

মানবকণ্ঠ/আরবি