Image

পোকা যখন দামি খাবার!

হালের সবচেয়ে দামি ডিনার আইটেম লবস্টারের কথাই ধরুন। শতাব্দীখানেক আগেই চিংড়িকে পাত্তাই দেয়া হতো না। চিংড়ি বিতর্কে নাই বা গেলেন। বিশ্বে প্রায় এক হাজার রকমের পোকা রয়েছে যেগুলো আহারযোগ্য। এর বেশিরভাগই যেমন সুস্বাদু, তেমনি পুষ্টিকর! তাই পোকা কীভাবে আরো বেশি পরিমাণে খাওয়ার যোগ্য করা যায়, সে চিন্তা করার আহ্বান জানিয়েছে স্বয়ং বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থা।

এমন অনেক পোকামাকড় নাকি বিপুল আমিষের আধার এবং এগুলো চাষ করাও সহজ। ফলে ভবিষ্যতে খাবারের চাহিদা মেটাতে এই পোকামাকড়ের কাছেই যেতে হতে পারে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করতে শুরু করেছেন বিজ্ঞানীরা। ফ্রান্সের এক বনেদি খাবার কোম্পানির করা ফড়িংয়ের গ্রিল বিক্রি হয় অনলাইনে। দাম কত ধরেছে জানেন? প্রতি ৩০ গ্রামের একটি বোতলের দাম ৯ ইউরো, প্রায় হাজার টাকা!

কড়া করে ভাজা গোবরে পোকা, শূককীট ও পঙ্গপাল নাকি মেক্সিকো, কলাম্বিয়ায় খুব জনপ্রিয়। লাতিন নয়, শুধু ইউরোপে তো অনেক আগে থেকেই পোকা খাওয়ার চল আছে। তবে জার্মানিতেও নতুন চালু হওয়া অনেক রেস্তোরাঁয় ঘাসফড়িং, শুয়োপোকা ভালো দামে বিকোয়। এশিয়া, আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার মানুষের কাছে একটু যেন বেশিই প্রিয় এসব পোকামাকড়। বিশ্বজুড়ে মানুষ কেন পোকাপ্রেমী হবে না? বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) মতামত শুধু আমিষ নয়, পোকামাকড় ফ্যাটি অ্যাসিড, আয়রন, ভিটামিন ও খনিজের একটি বড় উৎস। সেই সঙ্গে এসব খাবার স্বাস্থ্যকরও। পোকা, বিশেষ করে লার্ভা বা শূককীটগুলো, একেকটি যেন আমিষের স্বর্গ! যেমন একশো গ্রাম উইপোকায় রয়েছে ৬১০ ক্যালরিয়া একটি চকোলেটের চেয়ে বেশি। এ ছাড়া এতে আছে ৩৮ গ্রাম আমিষ ও ৪৬ গ্রাম চর্বি। পোকামাকড় খেতে কিন্তু তেমন খারাপ নয় বরং সুস্বাদু, পোকাখেকোরা এমনটাই বলেন। আবার গরু, ছাগল, ভেড়ার চেয়ে এগুলো পালতে খরচ যেমন কম পড়ে তেমনি পরিশ্রমও হয় কম। এ ছাড়া এরা গ্রিনহাউস গ্যাসও কম উৎপাদন করে।

অন্য একটি বিষয়ও ভাববার রয়েছে বৈকি। ২০৫০ সালের মধ্যে পৃথিবীর জনসংখ্যা গিয়ে দাঁড়াবে ৯০০ কোটিতে। এত লোকের খোরাকির জন্য খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে দ্বিগুণ। ‘পেটে-ভাতে’ বেঁচে থাকার সমীকরণ আরো জটিল হয়ে যেতেই পারে।

মানবকণ্ঠ/জেএস