Image

কালিগঞ্জে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী নিয়ে বসতভিটা জবরদখল ও ঘরবাড়ি ভাংচুর, দুই নারী আহত

বিশেষ প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে আদালতের আদেশ অমান্য করে বসতভিটা জবরদখল ও ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সুফিয়া বেগম (৫৫) ও সাবিনা খাতুন (৩৩) নামে দুই গৃহবধূ কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন। আদালত অবমাননা করে জবরদখল ও ভাংচুরের বিষয়ে কালিগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও আইন আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অসহায় পরিবারটিকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে সেখানে দখলদার বাহিনী অবস্থান করছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

উপজেলার ভাড়াশিমলা ইউনিয়নের চৌবাড়িয়া গ্রামের আসমান আলী গাজীর ছেলে ভুক্তভোগী আজিজুল হাকিম (৩৫) জানান, তিনি প্রায় ১৫ বছর পূর্বে চৌবাড়িয়া মৌজায় (জে.এল নং-০৭) এসএ-১৭৯, আর.এস ৩১৩/১, এস.এ দাগ নং-৫২০, ৫২১, আর,এস-৪৮১ দাগে ৩১ শতক জমির মধ্যে সাড়ে ৫ শতক জমি ক্রয় করে ৬৪৮ নং নামজারি খতিয়ানে ৪৮১ দাগে ঘরবাড়ি নির্মাণ করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বসবাস করছি। সম্প্রতি আমার বসতভিটা জবরদখলের জন্য একই গ্রামের মরহুম জনাব আলীর ছেলে সিরাজুল ইসলাম (৫৫), তার ছেলে সাদ্দাম হোসেন (৩০), শাহরিয়ার (২৮), আব্দুল খোলম অপতৎপরতা শুরু করেন। এর প্রেক্ষিতে আমার মা সুফিয়া বেগম গত ০৭-০৫-২৫ তারিখে সাতক্ষীরায় বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৫ ধারায় ৭৭৭/২৫ (কালিঃ) পিটিশন মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য কালিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশনা প্রদান করেন। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক মোঃ সাচ্চু শেখ উভয় পক্ষকে নোটিশ দিলে তারা ক্ষিপ্ত হয়। একপর্যায়ে গত রোববার (১১ মে) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সিরাজুল ইসলাম গং চৌবাড়িয়া, ঘোড়াপোতাসহ পাশর্^বর্তী এলাকা থেকে সন্ত্রাসী বাহিনী ভাড়া করে ধারালো দা, শাবল, লোহার রডসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আমার বসতভিটায় প্রবেশ করে গাছগাছালি কাটতে থাকে ও ঘেরাবেড়া নির্মাণ করতে থাকে। এ সময় আমার মা সুফিয়া বেগম (৫৫) ও ছোট ভাবি সাবিনা খাতুন (৩৩) তাদের দখল প্রচেষ্টায় বাধা দিলে তারা শাবল, লোহার রড ও ধারালো দা দ্বারা আমার মা ও ভাবিকে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি মারপিট করে জখম করে। জবর দখলকারীরা আমাদের ঘরবাড়ি ভাংচুর ও গাছ গাছালি কেটে লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিসাধন করে এবং জীবননাশসহ বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিতে থাকে। পরবর্তীতে প্রতিবেশীরা এসে আমার মা ও ভাবিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। বর্তমানে তারা সেখানে চিকিৎসাধীন আছেন।
এ ঘটনায় সিরাজুল ইসলামসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ১৫ থেকে ২০ জনকে বিবাদী করে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, পুলিশ উভয়পক্ষকে জমির কাগজপত্র নিয়ে সোমবার সকালে থানায় ডাকলেও তারা তাতে কর্ণপাত করেনি। উপরন্তু ঘটনার পর থেকে সিরাজুল ইসলাম (৫৫) গং ও কয়েকজন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীকে নিয়ে বসতবাড়ি জবরদখল করে সেখানে অবস্থান করছেন। এমতাবস্থায় আদালতের নির্দেশনা অমান্যকারী জবর দখলকারীদের কবল থেকে তার বসতভিটা ও ঘরবাড়ি রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।