Image

কালিগঞ্জে স্কুল শিক্ষিকা আলো’র অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন

আবু হাসান: সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার ৬৩নং বেনাদনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা আছিয়া পারভীন আলো’র অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন করেছেন অভিভাবক ও এলাকাবাসী। সোমবার (১২ মে) সকাল ১০ টায় বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে ঘণ্টাব্যাপী এই মানববন্ধনে অভিভাবকসহ এলাকার বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা জানান, বেনাদোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মোছাঃ আছিয়া পারভীন আলো দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করছেন। এছাড়া তিনি নিয়মিত পাঠদান থেকে বিরত থাকার কারণে বিদ্যালয়ে শিক্ষার মান ও পরিবেশ দুটোই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিভিন্ন ¯েøাগন সম্বলিত প্লাকার্ড হাতে নিয়ে তারা বলেন, ‘‘আমাদের সন্তানরা বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষার আলো পাচ্ছে না। একজন আদর্শ শিক্ষকের যে গুণাবলি থাকা প্রয়োজন তার একটিও আছিয়া পারভীন আলোর মধ্যে নেই। আমরা তার বদলি চাই।”
তারা আরও জানান, অভিযুক্ত শিক্ষিকার সঙ্গে বিদ্যালয়ের সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও জমিদাতা সদস্য আরিফুজ্জামান লিটুর দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। আরিফুজ্জামান লিটু অনিয়মের মাধ্যমে জমিদাতা সদস্য হয়েছেন এমন অভিযোগ তোলেন শিক্ষিকা আছিয়া পারভীন আলো। তবে ১৯৯২ সালে বিজ্ঞ আদালতের রায়ে ওই বিদ্যালয়ের জমিদাতা হিসেবে স্বীকৃতি পান বলে জানান আরিফুজ্জামান লিটু। এছাড়াও সম্প্রতি প্রথম সাময়িক পরীক্ষা চলাকালীন আরিফুজ্জামান লিটু চারুকলা ও সংগীত বিষয়ে নম্বর দেওয়াকে কেন্দ্র করে আপত্তি তোলেন এবং প্রধান শিক্ষককে ওই দুটি বিষয়ের পরীক্ষা বন্ধ রাখার প্রস্তাব দেন। এর প্রেক্ষিতে আলো তার ফেসবুক পোস্টে লিটুকে পাগল আখ্যা দিয়ে অবজ্ঞাসূচক মন্তব্য করেন। এঘটনাকে কেন্দ্র করে পরদিন আরিফুজ্জামান লিটু বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ করতে গেলে নৈশপ্রহরী প্রিন্টন এর সঙ্গে তার কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে লিটু তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন বলে অভিযোগ উঠে। এর জের ধরে পরদিন আলো, তার স্বামী হুমায়ূন এবং মা মিলে আরিফুজ্জামান লিটুকে রাস্তায় গতিরোধ করে মারধর করেন। পরে উভয়পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়ায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ওই ঘটনায় উভয়পক্ষ কালিগঞ্জ থানায় পৃথক অভিযোগ দায়ের করেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শিক্ষিকা আছিয়া পারভীন আলো বলেন, “আমি সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে কথা বলি বলেই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। মানববন্ধনের নামে আমার সম্মানহানি করা হয়েছে।’’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়নাল আবেদিন বলেন, “শিক্ষিকা আলো আমার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছেন। আর আরিফুজ্জামান লিটু আমাদের কর্মচারিকে লাঞ্ছিত করেছেন।’’

এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “উভয়পক্ষ লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। নৈশপ্রহরীকে লাঞ্ছিত করার বিষয়েও অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্তপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’