Image

সৈয়দপুরে খড়খড়িয়া নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, ভাঙ্গনের কাবলে আবাদি জমি

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি: নীলফামারীর সৈয়দপুরে খড়খড়িয়া নদীতে মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। শহরের কুন্দল এলাকায় ইকু পেপার মিলের উত্তরের এলাকায় খড়খড়িয়া নদী থেকে দিনেদুপুরে তোলা হচ্ছে বালু। এতে করে নদী সংলগ্ন আবাদি জমি ভাঙ্গনের কবলে পড়ে নদীতে বিলীন হচ্ছে। যা খাস জমিতে পরিণত হচ্ছে। এতে করে নদী সংলগ্ন জমির মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ভুমিহীনে পরিনত হচ্ছেন। এ ঘটনায় গত ২৪ জুন ক্ষতিগ্রস্ত শহরের নতুন বাবুপাড়া কলেজ রোড এলাকার বাসিন্দা মৃত. নজরুল ইসলামের ছেলে মো. সাইফুল ইসলাম নীলফামারী জেলা প্রশাসক, সৈয়দপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী, সৈয়দপুর ইউএনও এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের রংপুর সমন্বিত জেলা দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। কিন্তু প্রশাসনের নির্লিপ্ততায় নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ হচ্ছে না। এতে করে নদী সংলগ্ন জমির মালিক চরম বিপাকে পড়েছেন।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, ২০০৫ সালে জনৈক সুফিয়া খাতুন কুন্দল এলাকায় খড়খড়িয়া নদীর পাশে ৪২১২ নম্বর দলিলমূলে ৭২ শতক জমি ক্রয় করেন। যার বর্তমান বিএস দাগ নম্বর ৩২৩,৩২৪ ও ৩২৪। তিনি ক্রয়কৃত জমির খাজনা নিয়মিত পরিশোধ করে আবাদ করে আসছেন। কিন্তু ২০১৪ সাল থেকে কুন্দল পশ্চিমপাড়া এলাকার প্রভাবশালী এক ব্যক্তি মেশিন বসিয়ে খড়খড়িয়া নদী থেকে অবৈধভাবে প্রকাশ্যে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করে আসছেন। এই বালু ব্যবসায়ীর দাপটে ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিক সুফিয়া খাতুনসহ অন্যদের পক্ষে বাঁধা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। আর ভুক্তভোগীর অভিযোগ দেয়ার পরও বালু উত্তোলন বন্ধে স্থানীয় প্রশাসনও কোন রকম পদক্ষেপ গ্রহন করেননি। ইতোমধ্যে জমির মালিক সুফিয়া খাতুনের আবাদি ১১ শতক জমি খড়খড়িয়া নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। পরবর্তীতে ওই জমি খাস সম্পত্তি হিসেবে বিএস রেকর্ডভূক্ত হয়েছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন কারণে আবাদি জমিগুলো নদীতে ভেঙ্গে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এতে সুফিয়া খাতুনসহ বিপুল সংখ্যক জমির মালিক অপূরণীয় ক্ষতির মুখে পড়ছেন। একই সঙ্গে অনেকে পরিনত হচ্ছেন ভুমিহীনে।

এদিকে, বর্তমানে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর জনৈক ব্যক্তি আবারও সুফিয়া খাতুনের আবাদি জমি সংলগ্ন এলাকায় খড়খড়িয়ে নদীতে মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন শুরু করেছে। বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় জমির মালিকও প্রকাশ্যে কোন কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না।


এ অবস্থায় ভুক্তভোগী জমির মালিকের ছেলে ব্যবসায়ী মো. সাইফুল ইসলাম নীলফামারী জেলা প্রশাসক, পাউরো’র নির্বাহী প্রকৌশলী, সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও দুর্নীতি দমন কমিশন বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে জমির ভাঙ্গল রোধে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করাসহ জড়িতদের আইনের আওতায় নেয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
এদিকে অভিযোগ দেয়ার এক মাস পেরিয়ে গেলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ফলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ওই বালু খেকো প্রভাবশালী ব্যক্তি।
এ নিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলার জন্য ঘটনাস্থলে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। তাঁর মুঠোফোনে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।